ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং জগতে সফল বুশরা কবির

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:৩০ | প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৫১

এ সময়ের অন্যতম ব্র্যান্ড প্রমোটার, ফ্যাশন ব্লগার ও ফ্যাশন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বুশরা কবির। শুরুতে এতটা সহজ ছিল না তার যাত্রা। একটু একটু করে পরিশ্রম দিয়ে আজ নিজেকে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড প্রমোটার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

২০১৮ সালে অনেকটা শখের বসেই ইনস্টাগ্রামে ছবি প্রকাশ করেন। তারপর শর্ট ভিডিও তৈরি করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ইনস্টাগ্রাম মাধ্যমে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে কাজ করেন বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে। বর্তমানে বুশরা কবির একজন সফল ও পেশাদার ব্র্যান্ড প্রমোটার, ফ্যাশন ব্লগার ও ফ্যাশন কনটেন্ট ক্রিয়েটর। এখন তিনি নিয়মিত স্বনামধন্য দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

যাত্রাটা শুরু কীভাবে? জানতে চাইলে বুশরা কবির বলেন, ‘আমার যাত্রাটা শুরু হয় ইনস্টাগ্রাম থেকে। আমি আসলে ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশন সচেতন। স্কুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সব জায়গায় আমার সবকিছু নিয়ে সবাই খুব প্রশংসা করতো। আমি ঘুরতে খুব পছন্দ করি। আমি ছবি তুলতেও পছন্দ করি। দেশে বা দেশের বাইরে কোথাও ঘুরতে গেলেই ছবি ও ছোট ছোট ভিডিও করতাম। এগুলো নিজের প্রোফাইলে আপলোড করতাম। সেখান থেকেই আমার ইনস্টাগ্রামের যাত্রা শুরু, যদিও এরমধ্যে কোনো আর্থিক চিন্তা ছিল না। তারপর ২০২০ সালে আমি ফেসবুক পেইজ চালু করি। কিন্তু প্রতিটি ভিডিওতে যখন সবার প্রশংসা পেতে শুরু করলাম, তখন আর ছাড়তে পারিনি। নেশার মতো হয়ে গেছে।’

এই কাজের অনুপ্রেরণা কে? জানতে চাইলে বুশরা কবির বলেন, ‘বাচ্চাসহ বাংলাদেশে বেড়াতে আসি। কোভিডের জন্য আর যেতে পারছিলাম না অস্ট্রেলিয়া। ফলে সেখানের চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। ঢাকায় একটা প্রতিষ্ঠান প্রথম আমাকে তাদের কোম্পানির ব্লগিংয়ের জন্য ডেকেছিল। কিন্তু আমি আসলে চাকরি করতে চাচ্ছিলাম। তারা আমাকে চাকুরির জন্য অফার করে এবং আমি ৬ মাস কাজও করি।''

তিনি আরও বলেন, 'কিন্তু আমি ব্লগিংটা নিয়ে পুরোটা কাজ করতে চাচ্ছিলাম। কারণ অনেক জায়গা থেকে অফার আসছিল। তখন চাকরিটা ছেড়ে দিই। এরপর ব্র্যান্ড প্রমোশনেরও প্রস্তাব আসতে থাকে। এই ব্যাপারে আমার একটু অনিহা থাকলেও মা আমাকে উৎসাহ দেন। প্রথম লাইভ থেকেই ভালো সাড়া পাই। আমার মা আর স্বামীই সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আমার সফলতার পিছনে তাদের অবদান অনেক।'

বুশরা কবির ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। পরে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে টেলি কমিউনিকেশনের ওপর স্নাতক করেছেন। মূলত তিনি একজন প্রকৌশলী। পরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। তারপর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে চাকুরী শুরু করেন, পাশাপাশি শখে ব্লগিংটাও করেন।

এছাড়াও তিনি ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার হিসাবে ৪-৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। একেবারে ‘আউট অব প্যাশন’ থেকে শুরু করে আইলা স্কিন, ইন্সিফ্রি, নিউট্রজেনা, রিয়েল ইউ, মিনিসো অস্ট্রেলিয়া, বাইস কসমেটিকস, মোনাকো ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করেছেন।

শুরু দিকে নিজেই বিভিন্ন ফ্যাশন পণ্য কিনে রিভিউ করতেন বুশরা কবির। এই ভিডিওগুলো তার ফলোয়ার সুন্দরভাবে গ্রহণ করেন এবং বিশ্বাস করেন। আর এখন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ড থেকে তাকে পণ্য পাঠায় রিভিউের জন্য বলে জানান বুশরা কবির নিজেই।

এরই মধ্যে তিনি ববি ব্রাউন থেকে শুরু করে পিক্সি বিউটি, নিউট্রিজেনা, ড্যানিয়েল ওয়েলিংটনের মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। আর বাংলাদেশের অসংখ্য ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। উল্লেখযোগ্য, ইউনিলিভার, পন্ডস, বিকাশ, নগদ, মেরিল, লাক্স, লুসি, অলিভ ওয়েল, দারাজ, ডাবার হানি, হিমালয়া, এক্সপেল, হরলিক্স, লাফজ, কারুজসহ আরও অনেক ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন।

ব্র্যান্ড প্রমোটিং-এর ভবিষ্যৎ কী? জানতে চাইলে বুশরা কবির বলেন, ‘ব্র্যান্ড প্রমোটিং-এর ভবিষ্যৎ কি হবে আমরা কিন্তু জানি না। একজন ইনফ্লুয়েন্সার এতোদিনে যে অভিজ্ঞতা ও আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করেছে তা দিয়ে নানা ধরনের বিজনেস শুরু করতে পারে। তাছাড়া যারা এখন ব্র্যান্ড প্রমোটিং করছেন বা যারা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার তাদের প্রত্যেকের কিন্তু ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আর ইউটিউব তো একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম। এটি থেকে মানুষ অনেক আগে থেকে আয় করছে। সেখানেও আমরা কাজ করতে পারি। এছাড়া কথা বলার ভঙ্গি, মানুষের সঙ্গে কমিউনিকেশন করা, জড়তা কেটে যাওয়ার ফলে চাইলে কেউ উপস্থাপনা পেশায়ও যেতে পারেন। আপনার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস চলে আসে, এর ফলে নানা পেশায় ভালো করা যায়। সবমিলিয়ে বলতে পারি, এই সেক্টরের মানুষের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :