সহকর্মীকে থাপ্পড় সাংবাদিককে মারধর, আগেও এডিসি হারুনের একাধিক অপকর্ম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৮ | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৪

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় আলোচনায় আসা পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ আগেও একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। সেসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায় না।

তবে শনিবার দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় এরইমধ্যে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে তাকে পিওএমে বদলি করে অফিস আদেশ জারি করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ সংবাদের শিরোনামে আসেন ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল। সেদিন রাজধানীর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে ‘গুলি শেষ’ বলায় এক পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড় মারেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তে ভাইরাল হয়।

তখন পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্দোলন উস্কে দেওয়ার অভিযোগ করে তার প্রত্যাহার চেয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। তবে সেসময় পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানিয়েছিলেন অনেকে।

এই ঘটনার পর আরও কয়েকবার সংবাদের শিরোনামে উঠে আসেন এডিসি হারুন অর রশীদ। সাংবাদিকদের হেনস্তা, শাহবাগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। কিন্তু প্রতিবারই তিনি থেকেছেন বহাল তবিয়তে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের পেটান এডিসি হারুন। তখন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সিনিয়র সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়।

নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের সময় পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড়ের ব্যাপারে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামকে অবহিত ছিলেন। সেসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কী পরিস্থিতিতে এডিসি হারুন অন্য পুলিশ সদস্যকে ধাপ্পড় মেরেছেন সেই বিষয়ে রমনার ডিসি যদি রিপোর্ট করেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে শনিবার রাতে নারীঘটিত একটি ব্যাপার নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় ধরে আনেন এডিসি হারুন। শাহবাগ থানার ভেতরে তাদের নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। হারুনের নির্যাতনে ছাত্রলীগের এক নেতার সাতটি দাঁত ভেঙে যায়।

ভুক্তভোগীরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।

মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রলীগ। দেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠনটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা এই ঘটনায় এডিসি হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় রবিবার অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে রমনা বিভাগ থেকে বদলি করে পিওএম উত্তর বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করার তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে রবিবার এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী জানান, থানার ভেতরে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পিটিয়ে জখম করার বিষয়টি তিনি অবহিত আছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই কর্মকর্তার (এডিসি হারুন) বিষয়টি এই প্রথম আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন করেছে তার জবাবদিহি তাকে করতে হবে। আমাদের কাছে এ ঘটনা এসেছে, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। পুলিশ যদি এ ধরনের অন্যায় করে তাহলে তার সাজা হবে। অবশ্যই বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানানো হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এসএস/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :