যার সহায়তায় ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতন, এবার সেই পরিদর্শককে সরানো হলো

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে রমনা জোনের এডিসি (সাময়িক বরখাস্ত) হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে থানায় তুলে নিয়ে যান শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) মো. গোলাম মোস্তফা। এই মোস্তফার রুমেই বেদম প্রহার করা হয় দুই নেতাকে। পায়ের বুট, অস্ত্রের বাট দিয়ে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতনের ফলে ছাত্রলীগ নেতার পাঁচটি দাঁত উপড়ে যায়। ধারাবাহিক নির্যাতনের একপর্যায়ে থানায় গুরুতর আহত হয়ে পড়লে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
আলোচিত এই ঘটনায় রমনা জোনের এডিসির পর এবার শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মো. গোলাম মোস্তফাকে বদলি করা হয়েছে। তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ দপ্তরের লাইনওয়ারে পদায়ন করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলি করা হয়।
থানাটির পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) পদে মো. গোলাম মোস্তফার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মো. আরশাদ হোসেন। তিনি এর আগে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) ছিলেন।
এদিকে সোমবার বিকালে রমনা জোনের সমালোচিত এডিসি হারুন অর রশীদকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদরদপ্তরে রাখা হয়েছে। এর আগে রবিবার রমনা থেকে সরিয়ে প্রথমে পিওএম উত্তরে সংযুক্তির পর পুনরায় বদলি করে এপিবিএনে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে যোগদানের আগেই তাগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার রাতে নারীঘটিত বিষয় নিয়ে ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে থানায় ধরে এনে নির্যাতন করেন তৎকালীন এডিসি হারুন অর রশীদ। এতে নাঈমের পাঁচটি দাঁত উপড়ে যায়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে ডিএমপি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এদিকে এডিসি হারুনকে সরিয়ে দেয়ার পর রমনা জোনের দায়িত্ব পেয়েছেন শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম। সর্বশেষ তিনি মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগের খিলগাঁও জোনালের দায়িত্বে ছিলেন।
একইদিন বিকালে ডিএমপির যুগ্মকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির দায় পুলিশ নেয় না। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর কাকে কতটুকু দায়ী করবে তার ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ চাকরিচ্যুত হতে পারে কেউ বা তিরস্কারও হতে পারে।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ বৈঠক। শেষে বেরিয়ে দলটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ডিএমপির তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা রাখছি। পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রক্তক্ষরণ হয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/এসএস/এফএ)

মন্তব্য করুন