মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোন কোন রাজনীতিবিদ আমলা পুলিশ কর্মকর্তা ব্যবসায়ী আইনজীবীর বিরুদ্ধে? গুঞ্জন কৌতূহল সর্বত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:০৭| আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০১
অ- অ+

তালিকায় কে কে আছেন? ইতিমধ্যে একান্ত আলাপে একে অপরকে প্রশ্ন করছেন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা। কেউ কেউ এই সরকারের আমলে জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন- তাদের নামও শোনা যাচ্ছে।

বিশেষ করে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বা আছেন- অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি, রেঞ্জ ডিআইজি, র‌্যাব কর্মকর্তাসহ এমন একাধিক কর্মকর্তার নামও ভেতরে ভেতরে জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। অবসরে গেছেন, কিন্তু অতীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তারাও আছেন ভিসানীতির আওতায়।

নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরাও কি এই ভিসানীতির আওতায় আছেন? এটা নিয়ে খোদ প্রশাসন ক্যাডারে কৌতূহল আছে।

শুধুই কি মন্ত্রী বা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যারা আছেন, তারাই পড়বেন এ ভিসানীতির আওতায়- তা জানার আগ্রহও আছে বেশ। এসব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্রই চলছে কথাবার্তা।

শুধুই কি সরকারি দল? কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে আছে বিএনপি ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দলগুলোর নেতাদের মধ্যেও মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় কারা কারা আছেন- তা নিয়ে নানান আলোচনা চলছে।

ঢাকা টাইমস সম্পাদক সূত্রে জানতে পেরেছে, একজন প্রতিমন্ত্রীও আছেন এই তালিকায়।

গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছিল- বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

একপর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশির ওপর মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগ শুরুর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধা দানে দায়ী এবং তাতে সহযোগিতাকারী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধি–নিষেধ আরোপ আজ শুরু করেছে। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এসব ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্যান্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির আওতায় ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। এসব ব্যক্তির মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা রয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পদক্ষেপ শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের যে লক্ষ্য রয়েছে, তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এছাড়া এর মধ্য দিয়ে যারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের প্রতি সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিরও প্রতিফলন ঘটছে।

তবে বাংলাদেশি কোন কোন ব্যক্তির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেই তালিকা প্রকাশ করেনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বলা হচ্ছে- মার্কিন নীতি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না। তবে যার যার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তাকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণা আসার পর শুক্রবার রাতে এর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধের আওতায় পড়াদের সংখ্যার বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। তবে এটুকু বলতে পারি সেই সংখ্যাটা খুব বড় নয়, ছোট। এ ব্যাপারে আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’

বিরোধী দল বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এখনও কিছু বলেনি। অতীতে নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যখন আলোচনা করেছিলাম তখন দুটি রাজনৈতিক দলের কথা উঠেছিল। এর একটি বিএনপি, অপরটি জামায়াত।

অন্যদিকে শনিবার দিনভর আলোচনায় ছিল এই ভিসানীতি। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে চায়ের দোকান পর্যন্ত চলছে আলোচনা। নানা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

এর আগে গত ২৭ মে বাংলাদেশকে উদ্দেশ করে ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করলে সেই ব্যক্তি ও তার পরিবারের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয় সেসময়। ওই ভিসা নীতি যে কোনো বাংলাদেশির ওপর কার্যকরের কথা বলা হলেও বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিকে সহায়তা করতে এ ভিসা নীতির ঘোষণা বলেও জানিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

এছাড়া ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে র‍্যাব এবং এর সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/আরআর/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাক সেনাপ্রধানকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে দুপক্ষকে আহ্বান
আ.লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি: শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় কর্মকর্তার মৃত্যু
বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা