সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল ও উকিল আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন

সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন।

শুক্রবার রাত ৩টা ১৯ মিনিটের দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহজাহান কামাল। উকিল আব্দুস সাত্তার রাত ৩টায় এভার কেয়ার হাসপাতালে মারা যান।

শাহজাহান কামালের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেছেন। আজ বেলা ১১টায় প্রথমে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

শাহজাহান কামাল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১১ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৮ সালে প্রায় এক বছর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর লক্ষ্মীপুর জেলায় গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন শাহজাহান কামাল। পরবর্তী সময়ে তিনি নবগঠিত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান তুষার জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। এক সপ্তাহ আগে শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শুক্রবার রাত ৩টা ২ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

উকিল আব্দুস সাত্তারের প্রথম জানাজা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। পরে সেখান থেকে মরদেহ নেয়া হবে সরাইলে।

আব্দুল সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/এফএ)