সালথায় বিনা মূল্যের ছাগল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ মৎস্য অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে

ফরিদপুরের সালথায় নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিনা মূল্যে ছাগল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নামমাত্র কম দামি ছোট ছাগল ও ছাগল পালনের জন্য নিম্নমানের ঘর বিতরণ করে বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ সংশ্লিষ্টরা ভাগাভাগি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপভোকারভোগী জেলেরা।
গত বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মৎস কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ছাগল বিতরণ করা হয়।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে নিবন্ধিত জেলেদের পুনর্বাসন প্রকল্পে বিকল্প কর্মসূচির আওতায় জন্য ৪ লাখ ৪ হাজার ৯০০ টাকা বরাদ্দ আসে। নিয়মানুযায়ী বরাদ্দের এই টাকা দিয়ে ২০ জন নিবন্ধিত জেলের মাঝে ২টি করে ছাগল ও ছাগল পালনের একটি ঘর দেওয়া কথা। তাতে প্রত্যেক জেলের জন্য ২০ হাজার টাকার বেশি বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
গত বুধবার ছাগল বিতরণকালে দেখা যায়, প্রত্যেক জেলেকে অসুস্থ কম বয়সি ২টি করে ছাগলের বাচ্চা ও ছাগল পালনের জন্য ছোট একটি করে ঘর দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ছাগলের খাবারও হচ্ছে। এ সময় উপকারভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ঘরগুলো দেখতে হাঁস-মুরগির আবাসনের জন্য তৈরি ঘরের মতো। ছাগলগুলোও কম দামি। সব মিলিয়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে ছাগল, ঘর ও খাবার দেওয়া হয়েছে। তাহলে বরাদ্দে বাকি টাকা কোথায় গেল সেই প্রশ্নও করেন তারা।
উপজেলার ভাওয়াল গ্রামের জেলে উপকারভোগী সুজন মালো বলেন, আমাকে যেই ২টি ছাগল দেওয়া হয়েছে তার দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার হবে। আবার যে ঘরটি পেয়েছি তা তৈরিতে সর্বোচ্চ খরচ হতে পারে ১৫০০ টাকা। সঙ্গে দিয়েছিল ১০ কেজি গমের ভূষি। যার দাম ৫০০ টাকা । সব মিলিয়ে ৭ হাজার টাকা মূল্যের জিনিস দিয়েছে।
পলাশ মালো বলেন, প্রত্যেক জেলের জন্য কত টাকা বরাদ্দ তা আমাদের জানানো হয়নি। ছাগলসহ হয়তো ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার জিনিস গেয়েছি। মূল্যের হবে হয়তো। তিনি আরও বলেন, আমাদের ভাওয়াল জেলে পল্লীতে ৫ জন জেলেকে ছাগল দেওয়া হয়েছে। সব কয়টি ছাগলই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কয়টা বাঁচে কয়টা মরে বলা যায় না। ছাগলগুলো আরো বড় দিলে ভাল হতো।
সুরেশ মালো নামে আরেক জেলে বলেন, গত বছর আমাদের জেলে পল্লীতে যেসব ছাগল দেওয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগ ছাগলই মারা গেছিল। এবার সেই একই ধরণের অসুস্থ ছাগল দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য পূরণ হওয়া থাক দূরের কথা আরও বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে। কখন ছাগলগুরো মরে যাবে সেই চিন্তা আছি।
জানা যায়, বরাদ্দে ৪ লাখ ৪৯০০ টাকা মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ছাগল, ঘর ও খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে বাকি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ছাগল ও ঘর সরবরাহকারী ও একজন প্রভাবশালী নেতা সিন্ডিকেট করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, প্রতিটি ছাগল ৭ কেজি ওজনের উপরে কেনার কথা। আমরা দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের প্রতিটি ছাগল ক্রয় করেছি। যার প্রতিটি ছাগলের মূল্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা। ঘরও নিয়মানুযায়ী দেওয়া হয়েছে। ছাগলের খাবার দেওয়ার কথা না থাকলেও আমরা ১০ কেজি করে খাবার দিয়েছি।
অসুস্থ ছাগল বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত বছর বেশ কিছু ছাগল মারা গেছে। তাই এবার ছাগলগুলো বিতরণের ভ্যাকসিন পুশ করে দিয়েছি। ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে। তারপরও অনেকে অনেক কথা বলছে। তবে ছাগল ও ঘর বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকে জানলাম। তবে যারা ছাগলগুলো পেয়েছে, তারা যদি অভিযোগ করে তাহলে হয়তো খতিয়ে দেখবো।
(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এআর)
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

কেন্দুয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, দামে হতাশ

সিদ্ধিরগঞ্জে অর্ধকোটি টাকার মাদক ও ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ২

কালীগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭টি বসতঘর, কোটি টাকার ক্ষতি

উপকূলে ৪ লাখ কৃষককে সেবা দিতে অর্ধশতাধিক কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ

নীলফামারীর ডিমলায় ছেলের কোদালের কোপে বাবার মৃত্যু

জয়পুরহাটে প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১

চাঁদপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাচ্ছে মাধ্যমিকের নতুন বই

বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাড়িতে বোমা হামলা, গাড়িতে আগুন

নির্বাচন নিয়ে বহির্বিশ্বের কোনো চাপ নেই: ইসি আলমগীর
