বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগালেন জামালপুরের আব্দুল মজিদ

জমি ছাড়াও যে বস্তায় আদা চাষ করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার কৃষক আব্দুল মজিদ। প্লাস্টিকের ব্যাগে (বস্তায়) মাটি ভরে বাড়ির উঠোন ও পরিত্যক্ত আঙিনায় আদার চাষ করেছেন তিনি। পূর্বের কৃষিদক্ষতা, ইউটিউব ও বগুড়া মসলা গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পরামর্শ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন কৃষক আব্দুল মজিদ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক শেষ করে পেশা হিসেবে কৃষিকে বেছে নেন আব্দুল মজিদ (৬৭)। তিনি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের রুদ্র বয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা। শুরু থেকেই কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন নানা ধরনের কৃষিপণ্য উৎপন্ন করে। সফলও হয়েছেন বারবার। বর্তমানে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।

এ বছরের এপ্রিল থেকে তিনি আদা চাষ শুরু করেছেন। বাড়ির আঙিনা ও আশেপাশের পরিত্যক্ত প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা পতিত জমিতে মোট ছয়টি প্লটে ১৪ হাজার প্লাস্টিকের বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল মজিদ এমন একজন মানুষ যার কাছে সঠিক পরামর্শের জন্য গেলে কখনও ফিরে আসতে হয়নি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করলেও কৃষিকেই তার পছন্দের পেশা হিসেবে বেছে নেন। সফলতাও পেয়েছেন। বর্তমানে সরিষাবাড়ীকে একটি কৃষি নির্ভর উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন নতুন চাষাবাদে অনুপ্রাণিত করছেন যুব সমাজকে।

আব্দুল মজিদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই আমার পছন্দের তালিকায় ছিল কৃষিকাজ। যেকোনো কৃষি খামার দেখলেই আমি সেখানে আটকে যেতাম। নতুন নতুন চাষাবাদ সবসময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মতো বারি-১ জাতের আদার চাষাবাদ শুরু করি। এই উপজেলায় আমিই প্রথম। আদা আবাদে কোন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করিনি। বাড়ির তৈরি ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহারে আদার গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিব্যাগে ৪০ টাকা করে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আদা উত্তোলন করতে আরও ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, প্রতি ব্যাগে ২ কেজিরও বেশি আদার ফলন পাওয়ার আশা করছি। সব খরচ বাদেও প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা লাভের আশাবাদী তিনি।

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, তিনিই প্রথম ব্যাগে আদার চাষ শুরু করেছেন। তার এই ব্যতিক্রমী আদা চাষে অন্যান্য কৃষকেরাও বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সর্বদা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে আমরাও কৃষকদের এ বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/০৭ নভেম্বর/ইএইচ)