কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহানের একান্ত সান্নিধ্য ও সাহচর্য

নাহিদা আশরাফী
| আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৩৮ | প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৩১

রাজধানীর কাঁটাবনে অবস্থিত কবিতাক্যাফেতে গত ১১ নভেম্বর বসেছিল ২৫তম জলধিসন্ধ্যার আসর। এই আসরের অতিথি ছিলেন উডুক্কু স্রষ্টা কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান। শুরুতেই জলধির পক্ষ থেকে ফুল আর লেখকের গ্রন্থ নামাঙ্কিত উত্তরীয় দিয়ে তাকে বরণ করে নেওয়া হয়।

এরপর লেখকের সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ, কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন, গল্পকার পারভীন সুলতানা, লেখক ও প্রাবন্ধিক মইনুদ্দীন খালেদ, কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার, গল্পকার ইশরাত তানিয়া, কবি আশরাফ আহমেদ, কবি ফরিদ কবির ও লেখক লাবণী মণ্ডল। লেখকের সৃষ্টি নিয়ে এত নিগুঢ় বিশ্লেষণ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আলোচনায় উঠে আসে লেখকের লেখার নিজস্ব বয়ান রীতি, উপস্থাপন, প্রকরণ, ক্লাসিফিকেশন অফ স্টাইল এমনকি শব্দচয়ণের অভিনবত্বও। তরুণ প্রজন্মের ভাবনায় কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান-এর সৃষ্টি কতটা দাগ কাটতে পারছে তা চমৎকারভাবে প্রকাশ করলেন লাবনী মণ্ডল ও ইশরাত তানিয়া।

শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন কথাসাহিত্যিক শাহনাজ পারভীন, গল্পকার খাতুনে জান্নাত, কবি মনিকা চক্রবর্তী, লেখক জেসমিন সুলতানা ও লেখক শারমিন সাথী।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান বলেন, ‘এমন আয়োজনের পর আমার আর কিছু পাবার নেই। ১৯৮৫-তে আমাকে নিয়ে সর্বশেষ একক কোনো আলোচনার আয়োজন হয়েছিল। এর মাঝে পেরিয়ে গেছে ৩৭ বছর! এতদিনে আর কারোই মনে হয়নি নাসরিন জাহানকে নিয়ে একটি একক আয়োজন করার। আমি অভিভূত, মুগ্ধ। জলধিকে কুর্নিশ।'

সবশেষে জলধি সম্পাদক নাহিদা আশরাফী সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক ডামাডোলে ঢাকার সন্ধ্যা স্থির দাঁড়িয়ে আছে। পনেরো মিনিটের রাস্তা পুরো তিন ঘণ্টা, সাড়ে তিন ঘণ্টা বসে আসতে হয়েছে অনেককেই। তবুও যারা এলেন তারা আমাদেরই যেন সম্মানিত করলেন। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।' নাসরীন জাহানের-এর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার হয়তো আর কিছুই পাওয়ার নেই কিন্তু আমাদের তো আছে। আমরা আপনার আরও অনাগত সৃষ্টির অপেক্ষায় থাকব।'

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সমকালীন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কথাসাহিত্যিক নাসরিন জাহান একটি প্রতিনিধিত্বকারী ও উল্লেখযোগ্য নাম। তাঁর লেখায় সমকাল ও সমকালীন জীবনের রূঢ় বাস্তবতার এক অনির্বচনীয় চিত্র দেখতে পাই আমরা। সহজ ও সস্তা দলের লেখক নন বলেই বোধকরি তিনি সাড়ে তিন দশকেরও বেশিকাল পড়ে 'জলধি'র সাহিত্য আড্ডায় নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হলেন। তার উচ্চারণ ও আনন্দ-প্রকাশ থেকে এটি অনুধাবন করতে মোটেও কষ্ট হলো না আমাদের যে, তিনি এই দীর্ঘকাল পরে একটি সাহিত্য আড্ডায় সংবর্ধিত হয়ে নিজেকে অনেক বেশি পূর্ণ ও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা অনুভব করলেন। আমরা জানি, তাঁর রচনার ব্যাপ্তি খুব বেশি নয় বটে কিন্তু তার রচনাসকল যেকোনো রুচিশীল পাঠকের জন্য অবশ্যপাঠ্য বলে বিবেচনা করতে বাধ্য হন বাংলা ভাষাভাষী মননশীল পাঠকেরা। এই লেখক তাঁর নিজেকে প্রচার-প্রসারে কখনোই উন্মুক্তভাবে নিয়োজিত রাখেন না বিধায় রুচিশীল ও মননশীল পাঠকের বাইরে তার সুবিস্তৃত পরিচয় এখনও প্রায় অনুদঘাঠিত। আমরা 'জলধি'র পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন করতে পেরে, তার সঙ্গে একটি নির্মল সন্ধ্যা অতিবাহিত করতে পেরে নিশ্চয়ই ধন্য হয়েছি। ভবিষ্যতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় 'জলধি'র পক্ষ থেকে আরও বেশি ও বড়ো আয়োজনে সমকালীন কবি, লেখক ও সাহিত্যিকদের সমন্বয়ে কোনো এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানে তাঁর তৃণমূল লেখকসত্তাকে আবিষ্কার করতে প্রচেষ্ট হব।

(ঢাকাটাইমস/১৬ নভেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :