রাষ্ট্রীয় অর্থে নেতাদের একতরফা নির্বাচনে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ: টিপু

রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহার করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার একতরফা নির্বাচনে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। শনিবার ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে টিপু এসব বলেন।
তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্রকামী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে সরকার পক্ষ রাষ্ট্রের কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, গ্রেপ্তার, পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন, গ্রেপ্তার, ফরমায়েশি সাজাসহ সকল প্রকার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধী দলকে ভেঙ্গে তথাকথিত নিজেদের পছন্দের নির্বাচনে আনার জন্য সকল প্রকার কূটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীজোট থেকে দু একজন খড়কুটো সরকার ভাগিয়ে নিতে পারলেও দেশের মানুষ যাদেরকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব মনে করে তারা সকলেই একটি প্ল্যাটফর্মে এখন অবস্থান করছে।
বিএনপি নেতা টিপু বলেন, দেশে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মানসিকভাবে সরকারের নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রক্রিয়াকে প্রকাশ্যে নীরবে সমর্থন না করে সমালোচনা করছে। সরকারি বাহিনী যাদেরকে গ্রেপ্তার, হত্যা, নির্যাতন, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, রিমান্ডের নামে নির্যাতন অমানবিকভাবে করছে, পীচমোড়া দিয়ে হ্যান্ডকাপ দেওয়া, তথাকথিত সাজা সবকিছুই গণতন্ত্রের স্বার্থে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হাসিমুখে বরণ করে নিচ্ছে, কারো ভেতরেই হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
টিপু বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হওয়ার পরে দেশ দুইটা ভাগে স্পষ্ট বিভক্ত হয়ে যাবে। এক পক্ষ নির্বাচনের পক্ষে অপর পক্ষ অস্বচ্ছ নির্বাচনের বিরুদ্ধে, সেই ক্ষেত্রে বিরোধীপক্ষের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। তখন বিশ্বের গণতন্ত্রকামী সকল দেশ এবং জাতিসংঘ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। দু-একটি দেশ এই অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার পক্ষে কথা বললেও তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রে তেমন কোনো প্রভাব রাখে না। আবার সরকারি শিবিরের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় বিএনপিসহ বিরোধী মতে নেতাকর্মীদের নির্যাতন প্রশাসনকে ব্যবহার করে হয়রানি করার চেষ্টায় সকল পক্ষ আছে। কিন্তু যখন মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হয়ে যাবে তখন যে পক্ষ মনোনয়ন পাবে না তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে, আবার যে পাবে সে নির্বাচনি তরী পার করার জন্য বিএনপিসহ অন্য দলের সমর্থকদের ভোট পাওয়ার আশায় অনেক ক্ষেত্রে কৌশলী হবে। সেই সুযোগটাই আন্দোলনকারীদেরকে ব্যবহার করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন যেহেতু শাসকগোষ্ঠী বিরোধী জোটকে ভাঙ্গার চেষ্টায় আছে সেই ক্ষেত্রে বিরোধী জোট নিজেদের কর্মীদের প্রতি কঠোর না হওয়ার কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ শেষ হওয়ার পরে নিজেদের দলের নেতাকর্মীরা যারা ফাঁকি দিচ্ছে তাদেরকে মাঠে থাকার কঠোরতা অবলম্বন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আন্দোলনের নতুন মোড় সৃষ্টি হবে সরকার পক্ষ আরো কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তখন সরকারের কোনো কূটকৌশল কাজে আসবে না। যেমনটা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় অসম্ভব এক সিদ্ধান্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অভি নিরুকে বহিষ্কারের মধ্যে দিয়ে নিয়েছিল যার ফলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তাই বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সামনের দিকে অগ্রসর হলে যেকোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ফলে গণতন্ত্রকামীদের বিজয় নিশ্চিত হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/জেবি/কেএম)

মন্তব্য করুন