লাভের আশায় আগাম জাতের ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন ভৈরবের কৃষকরা

লাভের আশায় আগাম জাতের ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কৃষকরা। এ বছর ভৈরব পৌরসভা ও উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার ছেড়ে বেশি ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাজারে আগাম জাতের ভুট্টার চাহিদা ও ভুট্টা মাড়াই সহজকরণ হওয়ায় কৃষকরা আবাদি ও পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার ছেড়ে বেশি ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬৫ হেক্টর কিন্তু আবাদ হয়েছে ৭০ হেক্টর জমিতে। কৃষকেরা আগাম জাতের-৭৭২০, লাখী সেভেন, সানসাইন, ধামাকাসহ অনেক ধরনের ভুট্টা চাষ করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শিমুলকান্দি, আগানগর, শ্রীনগর, সাদেকপুর, মৌটুপী, ভবানীপুর, শ্রীনগর, মানিকদি, গজারিয়া এলাকার কৃষকেরা ভুট্টা জমিতে পানি সেচ, কীটনাশক দেওয়া ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে গাছে গাছে ফুল এসেছে, এছাড়া আগাম জাতের ভুট্টার জমিতে ভুট্টা পরিপক্ব হয়েছে তা বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছেন কৃষকরা ।
উপজেলার মেন্দিপুর গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, আমাদের এলাকার অনেক পতিত জমি ৮-১০ বছর যাবত কোনো ফসল চাষ করা হয়নি। তাই গ্রামবাসী সকলেই সিদ্ধান্ত নেয় পতিত জমিতে আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করবো। সেই অনুযায়ী সকলেই যার যার জমিতে ভুট্টা চাষ করেছে। এ বছর আমি একশো শতাংশ পতিত জমিতে আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছি। এসব জমিতে প্রায় ২৫-৩০ হাজার খরচ হয়েছে। জমিতে ভুট্টার বাম্পান ফলন হয়েছে এখন যদি বাজারে ন্যায্য দাম পাওয়া যায় তাহলে এক লাখ টাকার মতো ভুট্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
আরেক কৃষক আবেদ আলী বলেন, আমাদের হাওরে জমিগুলোতে গরু চড়তো। এসব জমিতে এ বছর আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছি। আমি তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি এতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকার মত জমিতে যে ফলন এসেছে আশা করছি লাখ টাকার উপরে ভুট্টা বিক্রি করতে পারবো।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, ভৈরবে এই বছর ৭০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ভুট্টার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ চাষ করা হয়েছে। সাদেকপুর, আগানগর, শ্রীনগর, গজারিয়াসহ ভৈরবের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের ভুট্রা চাষ করা হয়েছে। তাছাড়া এই উপজেলায় ভুট্টার আবাদে কৃষকদের আগ্রহী করতে আমাদের প্রণোদনার মাধ্যমেও কৃষক ভাইদের ভুট্টার বীজ ও সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের মাঠ পর্যায়ে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে থেকে তাদের আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে ভুট্টা আবাদ করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
ভুট্টা চাষে কৃষকদের একটি সমস্যা ছিলো ভুট্টার মাড়াইকরণ নিয়ে কিন্তু এখন আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনের মাধ্যমে ভুট্টার মাড়াইকরণ সহজ হওয়ায় সেই সমস্যা সমাধান হয়েছে। যার ফলে কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
(ঢাকা টাইমস/২৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন