সরেজমিন: রাজধানীতে নেই হরতালের প্রভাব, সড়কে তীব্র যানজট

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালের প্রভাব পড়েনি রাজধানীতে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকার সড়কগুলোতে যান চলাচল একেবারেই স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধের জেরে রাজধানীতে যান চলাচল কিছুটা কম থাকলেও এখন চিত্র বদলেছে। তৃতীয় দফার হরতালে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সড়কে দেখা যায় তীব্র যানজট।
ফলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ৮-১০ মিনিট পর পর সিগন্যাল ছাড়তে দেখা যায়। সেইসঙ্গে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় হরতাল উপেক্ষা করেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং অফিসগামী যাত্রীদের নির্বিঘ্নে এবং স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মগবাজার, শাহবাগ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলামোটর মোড়ে মিরপুরগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আরিফুল ইসলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তিনি তার গন্তব্যের বিআরটিসি বাস পেয়ে যান।
বাসে ওঠার আগে ঢাকা টাইমসকে আরিফুল বলেন, ‘কাজের তাগিদে হরতাল-অবরোধে তো ঘরে বসে থাকা যায় না। ঝুঁকি নিয়ে হলেও বের হতে হয়। তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় হরতাল-অবরোধ পালন হচ্ছে বলে মনে হয় না। প্রত্যেকটা সড়কে আগের মতোই যান চলাচল স্বাভাবিক।’
বাংলামোটর মোড় থেকে গুলিস্তান যাবেন আল আমিন। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘একটা কাজে গুলিস্তান যেতে হচ্ছে। হরতালের দিন গাড়ি পাবো কি না, এই শঙ্কা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু গাড়ির তো অভাব নেই। তবে যাত্রীদের এত চাপ যে বাস ফাঁকাই পাচ্ছি না।’
এদিকে হরতালে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ৪৪২টি টহল দল এবং ১৬১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে চলছে টহল ও তল্লাশি।
এর আগে হরতাল সফলের আহ্বান জানিয়ে বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, ‘বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো দুর্জয় গতিতে জীবনবাজি রেখে এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলো পালন করছে। সরকারের রক্তচক্ষু, চোখ রাঙানি, গ্রেপ্তার অভিযান, নিষ্ঠুর দমনপীড়নের মধ্যেও অকুতোভয়ে নেতাকর্মীরা তাদের দুরন্ত মিছিল অব্যাহত রেখেছে।’
রিজভী আহ্বান জানান, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ এবং বিএনপির মহাসচিবসহ সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে চলমান অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি সফল করতে সবাই এগিয়ে আসুন।’
মূলত, সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য সমমনা দলগুলো এই কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার পালিত হয়েছে অষ্টম দফার একদিনের অবরোধ। বৃহস্পতিবার চলছে তৃতীয় দফায় একদিনের হরতাল।
(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন