যে কারণে শিশুদের নিয়ে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৩

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সকাল ৮টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আজিজুল হক বাঁধন। সন্তানদের হাতে জাতীয় পতাকা, মাথায় বিজয় দিবসের ফিতা। অপলক দৃষ্টিতে স্মৃতিসৌধের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।

এই পরিবারটি ঢাকা টাইমসকে বলেন, দুই মেয়ে তাসনিয়া (৪) ও তাবাসসুমকে (১০) নিয়ে সকালেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি যাতে ওদের দেশের প্রতি মায়া-মমতা তৈরি হয়।

এই অভিভাবক আরও বলেন, যখন স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, তাদের পরাজয় নিশ্চিত। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান বা বুদ্ধিজীবীরা বেঁচে থাকলে এ মাটিতে তারা থাকতে পারবেন না। তাই পরিকল্পিতভাবে এই জাতিকে মেধাহীন ও পঙ্গু করার লক্ষ্যে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সন্তানদের বধ্যভূমিতে নিয়ে আসার আগে এই নৃশংস ইতিহাস তুলে ধরেছি।

মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শিশু সন্তানদের নিয়ে আসা অভিভাবকরা বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের দেশ ও মাটির জন্য যে ভালোবাসা, মূল্যবোধ এবং স্বাধীনতার চেতনা সন্তানদের মধ্যে জাগ্রত করতেই প্রতিবছর তাদেরকে নিয়েই শ্রদ্ধা জানাতে আসি।

মোহাম্মদপুর থেকে ৫ বছরের মেয়ে নূরজাহান জরিকে নিয়ে এসেছেন জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাকে যদি এখন থেকে দেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে শিক্ষা দিতে না পারি, তাহলে বড় হয়ে দেশের স্বাধীনতা চেতনা মূল্যবোধ হয়ত শেখা হবে না। আর এখন যে শিক্ষা দিব তার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠবে সন্তান।’

দেড় বছরের শিশু আরহামের মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে প্রথমবারের মতো শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ দেখাতে নিয়ে এসেছেন দেলওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বাসায় টিভিতে দেখে ছোট মানুষ ঠিক বুঝতে পারে না কি দেখছে। কিছু বুঝতে না পারলেও মুখরিত মানুষের ভিড়ে তো সরাসরি দেখতে পাচ্ছে। সন্তাননদের বেড়ে ওঠার জন্য জাতীয় দিবসগুলোর সাথে ছোটবেলা থেকেই সম্পৃক্ত করা মা-বাবার দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি।

দুই নাতিকে নিয়ে মিরপুর ১ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এসেছেন নূর মোহাম্মদ। বিজয় অর্জনের ঠিক আগ মুহূর্তে পাকিস্তানি সেনারা ও দেশের রাজাকাররা মিলে দেশের বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করায় সে ক্ষতি আজও পূরণ হয়নি বলে মনে করেন এই বায়োবৃদ্ধ ব্যক্তি। জানান প্রতিবছরই নাতিদের নিয়ে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসেন। এসব দেখে যাতে আমার নাতিরা শিখতে পারে। ১৯৭১ সালের শহীদদের প্রতি দোয়া এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন বলেও জানান তিনি।

সকাল থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দেখা মেলে হাজারও জনতার ভিড়। হাতে ফুলের ডালি আর নানা রকম ব্যানারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় সাধারণ মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের বিজয়েরর ঠিক আগ মুহূর্তে দেশকে মেধাশূন্য করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। তাই বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন ১৪ ডিসেম্বর।

(ঢাকাটাইমস/১৪ ডিসেম্বর/টিআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :