বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে পুলিশের হাতে চিত্রসাংবাদিক লাঞ্ছিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:০৬
অ- অ+

গাইবান্ধায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার হাতে ডিবিসি টেলিভিশনের চিত্রসাংবাদিক মোকছেদুর রহমান লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

শনিবার বিকালে গাইবান্ধা ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে গাইবান্ধা ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও সাংবাদিকদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধার শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ছবি নেওয়ার সময় এঘটনা ঘটে। এসময় অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল ও পুলিশ সুপার কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।

মানবন্ধনে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, সকালে গাইবান্ধা শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের সংবাদ সংগ্রহে করতে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। সেখানে বিজয় দিবসের ডিসপ্লে প্রদর্শনের সময় অন্যদের মতোই ছবি নিচ্ছেলেন ডিবিসির চিত্রসাংবাদিক মোকছেদুর রহমান। এ সময় হঠাৎ বি সার্কেল আব্দুল্লাহ আল মামুন মোকছেদের ট্রাইপট ধরে সরে দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলে তিনি মোকছেদুরকে ধাক্কা দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে লাথি মারতে চান। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ও গাইবান্ধার স্থানীয় দৈনিক মাধুকরের স্টাফ রিপোর্টার আবু সায়েম জানান, বি সার্কেল (আব্দুল্লাহ আল মামুন) মোকছেদুরকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাথি মারতে চেয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

ভুক্তভোগী মোকছেদুর বলেন, আমিও সবার মতোই ছবি নিচ্ছিলাম। পেছন থেকে দেখা যাবে না বলে আমি বসে গেছি। তারপরেও উনি (আব্দুল্লাহ আল মামুন) এসে আমার ট্রাইপট (ক্যামেরার স্ট্যান্ড) ধরে টান দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে ধাক্কা দেন এবং খারাপ ভাষায় গালি দেন। পুলিশের এমন আচরণে আমি মর্মাহত। আমার সম্মান চরমভাবে খর্ব হয়েছে।

এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন প্রেস ক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেনসহ জেলা উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেছেন অনেকেই।

প্রেস ক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন বলেন, বিষয়টি চরম অবমাননাকর। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্টেডিয়ামে আমাদের জন্য আলাদা কোনো স্পেস করা হয়নি। আমরা দায়িত্বপালন করতে গিয়ে কোনো না কোনোভাবে ছবি নিতেই হবে। কিন্তু সেখানে যদি একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। তাহলে সরকারি প্রোগ্রাম আমরা কাভার করবো কীভাবে? এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সভাপতি খালেদ হোসেন।

এদিকে একই মন্তব্য করেছেন প্রেস ক্লাব গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসনও।

এ বিষয়ে ডিবিসির গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিকতু প্রসাদ পুলিশের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযোগ নিয়ে বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যাচ্ছি। যথাযথ প্রতিকার না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন মোবাইল ফোনে এমন ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এরকম কিছু হয়নি। আমি তাকে ধাক্কা দেইনি বা কোনো গালিগালাজ করিনি। কেউ যদি এরকমভাবে এখন বলে কী আর করার থাকে।

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকে অনেক লোকই মোবাইল, ক্যামেরা দিয়ে ছবি উঠাচ্ছিলো। আমরা সবাইকে সরতে বলছিলাম। তারমধ্যে উনি স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা নিয়ে মাঝখানে গেছেন। তখন আমি তার স্ট্যান্ডটা ধরে সরাতে বলেছি। কিন্তু উনি (মোকছেদ) আমারে 'এমন ঝাড়ি (আচরণ) মেরেছেন, কী আর বলবো! জানি না উনি আমারে চিনে এমন করেছেন, নাকি না চিনে করেছেন বলে যোগ করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/ইএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আজ রাতে এক মিনিট অন্ধকারে থাকবে সারা দেশ, কেন এ ‘ব্ল্যাক আউট’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নে যা বললেন মুখপাত্র
গণহত্যা দিবসে জাতীয় পর্যায়ে পালন হবে যেসব কর্মসূচি
আজ জাতীয় গণহত্যা দিবস, কী ঘটেছিল একাত্তরের সেই কালরাতে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা