উজিরপুর থানার এসআইয়ের বিরুদ্ধে রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে অভিযোগ, তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৩০

পেশার বাইরে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। তার নাম মেহেদী হাসান মিলন।

এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়, জেলা পুলিশ ও সার্কেলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের ছয়জন ইউপি সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০ জন ভুক্তভোগী। এরইমধ্যে বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করেছে জেলা পুলিশ।

তাছাড়া পুলিশ কর্মকর্তার খারাপ আচরণের শিকার হয়ে এর আগেও বেশ কয়েকজন গ্রাম পুলিশের সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগ তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, এসআই মিলন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যহার করে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত। তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে জামায়াত-বিএনপি বানানোর হুমকি দেন।

অভিযোগ বিষয়ে উজিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাজহারুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার কার্যালয়ে ভুক্তভোগীরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। সেটা জানতে আজ তাদেরকে (ভুক্তভোগী) ডাকা হয়েছে। আমি নিজেই তাদের কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়ে শুনতেছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, উজিরপুর মডেল থানার এসআই মেহেদী হাসান মিলন বামরাইল ইউনিয়নের দায়িত্ব পালনকালে তার রোষানলে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ মামলার আসামি হয়েছেন। এসআই মেহেদী একজন বদমেজাজি। তার অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তিনি আইনের কোনো কিছুই তোয়াক্কা করেন না। ঘুষ বাণিজ্যই তার প্রধান ব্যবসা। তিনি একপক্ষের থেকে টাকা খেয়ে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করাতে বাধ্য করেন। তার হাত থেকে উজিরপুরের শান্তিপ্রিয় মানুষগুলোকে রক্ষা ও পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় অভিযোগে।

লিখিত অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন, বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহীন হাওলাদার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বজলুর রহমান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সলেমন হোসেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সুমন হাওলাদার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম হাওলাদার, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও উজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মাইনুল ইসলাম তালুকদার, বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান ও বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিরাজ হোসেন।

বামরাইল ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম তালুকদার বলেন, এসআই মেহেদী একজন দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোর অফিসার। তার কারণে পুলিশের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন উজিরপুরে দাপটের সঙ্গে চাকুরি করে নানা ধরনের অপকর্ম করেছেন। এই পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অতিষ্ঠ হয়ে আমিসহ বামরাইল ইউনিয়নের ছয়জন মেম্বর পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

তার হাতে অপদস্থ হওয়া যুবলীগ নেতা জাইদুল ইসলাম মিঠু বলেন, আমাদের এলাকায় দুই শিশু মারামারি করলে এ ঘটনা স্থানীয়ভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এসআই মেহেদী এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষকে মামলা দায়েরের জন্য চাপ দেয়। এসময় তারা মামলা না করে পালিয়ে আসলে এসআই মেহেদী হাসান আমাকে লাঞ্ছিত করেন।

হস্তিসুন্ড গ্রামের সেলিম হাওলাদার বলেন, স্থানীয়ভাবে মানুষ আমার কাছে অনেক সময় বিচার নিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে সকল পক্ষ মিলে কোনো মীমাংসা করা হলে তা নিয়ে বিরক্ত দেখাতেন এসআই মেহেদী। তিনি ছোট-খাটো সকল বিষয়ে মামলা করার বা সব চেষ্টা করেন। যাতে সব পক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে পারেন।

তবে এসআই মেহদীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আহম্মদের। তিনি বলেন, মেহেদীর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা আমি জানি না। ঊর্ধ্বতন স্যাররা বিষয়টি দেখবেন।

যে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ নেই এসআই মেহেদী হাসান বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন; যার কোনো সত্যতা নাই, সব মিথ্যা।

(ঢাকাটাইমস/১৭ডিসেম্বর/এসএস/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :