ফরিদপুরের পর লক্ষ্মীপুর: স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে পদ গেল আ.লীগের ১১ নেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০২ | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৩

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিষ্কার ঘোষণা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। তাতে কারও পদ-পদবী যাবে না। এমনকি, দলীয় নেতাকর্মীরাও চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং বিশ্ব দরবারে গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় বর্তমান সরকারি দল আওয়ামী লীগ।

অথচ দলের শীর্ষ পর্যায়ের সেই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোণঠাসা করতে তাদের পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীদের পদ-পদবী কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেওয়ায় পদ হারালেন আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতা!

ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তারের (ট্রাক প্রতীক) পক্ষে কাজ করায় এই ১১ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ভবিষ্যতে তারা দলীয় কোনো পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না বলেও জানানো হয়।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী, কোষাধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী, শ্রম সম্পাদক নাছির পাটওয়ারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সদ্য সামছুল আলম বাবুল পাটওয়ারী, নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী, লোকমান মাস্টার ও মো. খালেদ।

একই অভিযোগে এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মাসুদকে নিয়ে মোট ১১ জন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহাবের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা দলীয় কার্যক্রমে পর পর অনুপস্থিত, দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত।

এতে গঠনতন্ত্রের ৪৭-এর ১১ ধারা মোতাবেক ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

আরও পড়ুন:- কেন্দ্রীয় নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালো আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ!

এ ঘটনার পর অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এতে থানা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

রুবেল লিখেছেন, ‘আপনাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানা কমিটির কোনো নেতাকে আপানারা থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। নিশ্চয়ই আপনারা আওয়ামী লীগের শত্রু, শেখ হাসিনার শত্রু।’

তিনি আরও লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন সর্বদিক চিন্তা করে একটি সুন্দর আংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোটারশূন্য নির্বাচন করার জন্য দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মানহানি করছেন।’

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা দলীয় কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। নৌকার প্রার্থীকে খুশি রাখতে ও নেতাকর্মীকে ভয় দেখাতে অগঠনতান্ত্রিকভাবে আমাদের অব্যাহতি দেওয়ার চিঠি দিয়েছে। অব্যাহতি দিতে হলে জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র আমাদেরকে অব্যাহতি দিতে পারবেন। থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনোভাবেই আমাকে অব্যাহতি দিতে পারবেন না।’

সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছি আমাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি যে, নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করতে পারবে না। বহিষ্কার বা অব্যাহতির নির্দেশনাও নেই। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে আমরা বসব।’

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু নৌকার প্রার্থী। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তার।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগে কেন্দ্রীয় নির্দেশনাকে ‍উপেক্ষা করে ফরিদপুর-১ আসনের আলফাডাঙ্গায় গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি অনৈতিকভাবে বিলুপ্ত করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে এখনো স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গেলেন আমীর খসরু

ক্ষমতায় যেতে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্দুস সামাদের সমাধিতে আ.লীগের  শ্রদ্ধা

অসুস্থ নেতাকর্মীদের দেখতে হাসপাতালে যুবদল নেতা মুন্না

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের আইন উপসম্পাদক হলেন জার্জিস বিন এরতেজা

রাজধানীর ৩৫টি স্পটে যুবলীগের সুপেয় পানি, স্যালাইন ও ছাতা বিতরণ

ওলামা দলের ৫ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা

প্রভূ রাষ্ট্রের পরিকল্পনায় ফরিদপুরে দুই সহোদরকে হত্যা করা হয়েছে: রাশেদ প্রধান

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ফজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া

যদি বন্ধু হও সীমান্তে অহরহ গুলি কেন, ভারতকে ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :