মৌলভীবাজারে তীব্র শীতে জনজীবন স্থবির 

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার
 | প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩৬

মৌলভীবাজারে মাঘ মাসের শুরুতে আবারও জেঁকে বসেছে শীত। জেলাতে গত ৩-৪ দিন ধরে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে, বইছে শৈত্যপ্রবাহ। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির

হয়ে পড়েছে। দিন-রাতে সমান তালে বইছে কনকনে হিমেল হাওয়া। ঘর থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছেন না। যারা বের হচ্ছেন তারা গরম কাপড় পরিধান করে বের হচ্ছেন। পাশাপাশি ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে রয়েছে পুরো মৌলভীবাজারের আকাশ। গেল এক সপ্তাহ থেকে সূর্যের দেখা মিলেনি। টানা কয়েকদিনের শীতের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

শীতে সবচেয়ে বেশি হাওর পাড়ের মানুষ, চা বাগানের শ্রমিক, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই খড়খুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও নামতে পারে।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক বিনেন্দ্র ভৌমিক জানান, শুধু শিশুদের জন্য সিট রয়েছে ৩৯টি। গত সপ্তাহে শীতজনিত রোগে হাসপাতালে ৭০-৭৫ জন শিশু ভর্তি ছিল। যা প্রায় দ্বিগুণ ভর্তি ছিল। বর্তমানে শিশু ভর্তি কমে আসছে।

এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছে। ফুটপাতে গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভিড় প্রতিদিন বাড়ছে।

তীব্র শীতে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ দিনমজুর মানুষ। সড়কে মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় ভ্যান ও রিকশা চালকদের আয় কমে গেছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলখোড়া ইউনিয়নের কৃষক রশিদ মিয়া বলেন, বোরো আবাদি জমিতে সেচ ও পাওয়ার টিলার দিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলাম। এতো ঠান্ডা পানি ও বাতাস। যে কাজ করাই কঠিন হয়ে গেছে।

একই এলাকার বাচ্চু মিয়া জানান, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে ধানের চারা রোপণের কাজ করেন। কয়েক দিনের অতিরিক্ত শীত ও হিমেল বাতাসের কারণে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। বেশি সময় পানি ও কাঁদার মধ্যে কাজ করা যায় না।

উপজেলার নিতেশ্বর এলাকার শিমুল আহমদ জানান, প্রচণ্ড কুয়াশা ও খুব ঠান্ডা পড়ছে। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও বিছানা পর্যন্ত যেন সব বরফ হয়ে গেছে। সকালে ঘরে থেকে বের হয়ে বোরো আবাদে গেলে হাত-পা ঠান্ডায় অবশ হয়ে আসে।

মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা এলাকায় আরবেশ আলী সহ কয়েকজন দিন মজুরের সাথে কথা হয়। তারা বলেন, কাজের সন্ধানে প্রতিদিন এখানে আসেন। অনেক দিন কাজ পাওয়া যায় না। কাজ পেলেও অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য কৃষি জমিকে কাজ করা যায় না। জীবিকার তাগিদে তাদের কাজ করতে হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ জানান, এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ হাজার হেক্টর জমি। ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তারা কৃষকদের চারা গাছগুলো পাতলা পলিথিন দিয়ে প্রতি রাতে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়াও কুয়াশা কমে গেলে পলিথিন সরিয়ে একটি কাটি দিয়ে চারা গাছের আগা থেকে কুয়াশার পানি ফেলে দেয়ারও পরামর্শ দেন।

(ঢাকা টাইমস/১৮জানুয়ারি/প্রতিনিধি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

দিনাজপুরে ভোট গণনার পর সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থক নিহত

বহিষ্কৃত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: সেলিম ভূইয়া

নোয়াখালীতে গরমে অসুস্থ এক শিক্ষক ও ১৪ শিক্ষার্থী

জয়পুরহাটে জামায়াত-শিবিরের ৬১ নেতাকর্মী কারাগারে

হিট স্ট্রোকে মাদারীপুরে ব্যবসায়ী ও কৃষকের মৃত্যু

সালথায় তীব্র গরমে অসুস্থ স্কুলের ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী 

আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

শতকোটি ব্যয়ে রংপুরে হচ্ছে ৪৬০ বেডের ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ হাসপাতাল

তীব্র খরার পুড়ছে পাটক্ষেত, পাতালেও মিলছে না পানি! দিশেহারা কৃষক

চাঁদপুরে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :