পঞ্চগড়ে নদীর পাড়ে মিলল মৃত চিতাবাঘ, তদন্ত কমিটি গঠন

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে নদীর পাড়ে একটি মৃত চিতা বাঘ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বাঘটির মৃত্যুর কারণ জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে আটোয়ারী উপজেলার তড়িয়া ইউনিয়নের দাঁড়খোর সীমান্ত এলাকা থেকে বাঘটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাঘটির মরদেহ উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। চিতা বাঘটির দৈর্ঘ্য ৫২ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

এদিকে বাঘটির মৃত্যুর কারণ জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বন বিভাগ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, আটোয়ারী উপজেলার দাঁড়খোর ভারতীয়

সীমান্তের ভারতীয় অংশের চা বাগান ও জঙ্গলে চিতা বাঘসহ অনেক বন্যপ্রাণী রয়েছে। সীমান্তের বাংলাদেশের অভ্যন্তরের চা বাগান এবং ভুট্টা ক্ষেতে মাঝে মধ্যে এসব প্রাণী দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার রাতে হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে সীমান্ত এলাকার দাঁড়খোর গ্রামের কৃষক আকবর আলীর একটি গরু মারা যায়। তবে প্রাণীটির বাঘ ছিল কিনা তা কেউ জানতে পারেনি। পরে মৃত গরুটিকে মাটি চাপা না দিয়ে নাগর নদীর পাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নাগর নদীর পাড়ে বাঘটির মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিজিবি, পুলিশ ও বনবিভাগের কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে যান।

স্থানীয়দের মতে গরুর মৃত দেহটিতে বিষ প্রয়োগ করা ছিল।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দাঁড়খোর গ্রামের আকবর আলীর একটি গরু হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে মারা যায়। পরে মৃত গরুটিতে বিষ প্রয়োগ করে নাগর নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয়দের ধারণা ছিল শেয়াল বা অন্য কোনো প্রাণী গরুটি মেরে ফেলেছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বাঘটিকে নদীর পানিতে পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে বনবিভাগকে খবর দিলে তারা মৃত বাঘটি উদ্ধার করে নিয়ে যান।

বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মধুসুধন বর্মণ বলেন, এলাকায় চিতা বাঘটিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছিল স্থানীয়রা। তবে বাঘটি কীভাবে মারা গেছে, তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। শুক্রবার সকালে মৃত অবস্থায় বাঘটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আটোয়ারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন বিভাগের মাধ্যমে আমাদের হাসপাতালে একটি মৃত বাঘ আনা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে ময়নাতদন্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব নেই, নমুনা পাঠানোরও তেমন ব্যবস্থা নেই। তবে বনবিভাগ যদি প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেয়, তাহলে ময়নাতদন্তের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় ল্যাবে নমুনা পাঠানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান বলেন, চিতাবাঘটির মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকা টাইমস/০২ ফেব্রুয়ারি/পিএস)