বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উদযাপনে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা

আজ পহেলা ফাল্গুন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বসন্তকে বরণ এবং ভালোবাসা দিবস উদযাপনে সমুদ্র কন্যা কুয়াকাটায় ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। বসন্তের আগমনের পাশাপাশি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব ও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সমুদ্রের জলে গোসল, আনন্দ উল্লাস, হই হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন আগত পর্যটকরা।
পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কপোত কপোতিসহ নানা বয়সের হাজার হাজার পর্যটকরা কুয়াকাটায় আসতে শুরু করে। বুধবার দিনভর পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে সমুদ্র সৈকত এলাকা। রং বেরং এর পোশাক পড়ে প্রিয়জনকে নিয়ে বিশেষ এই দিন উপভোগে সৈকতের বালিয়াড়ীতে হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়ানো, আলপনা আকা, খেলাধুলা, সমুদ্রের নীল জলে গাঁ ভাসিয়ে দিয়েছেন পর্যটকরা। কেউ প্রিয়জনের সাথে ছবি তুলে স্মৃতির পাতায় বাধিয়ে রাখছেন। আবার কেউ বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন বিশাল সমুদ্র ও সমুদ্রের ঢেউ। শিশুদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মত। আগত পর্যটকরা কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
আগত পর্যটকরা জানান, বসন্তের আগমনের পাশাপাশি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে উদযাপন করতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ছুটে এসেছেন। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ ভ্রমণ তাদের। সমুদ্রের হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতিকে উপভোগ করতে পেরে খুবই খুশি আগতরা।
খুলনা থেকে ভ্রমণে আসা টিপু জানান, ভালোবাসা দিবসে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছেন। এখানে আসার পর খুবই ভালো লেগেছে। এখানকার পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। রাফা তাজ দম্পতি জানান, তারা কুয়াকাটায় অনেকবার এসেছেন। এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশ তাদেরকে খুবই আকৃষ্ট করে। তাদের বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে কুয়াকাটাকেই বেছে নিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডালিম-সাথী দম্পতি বলেন, বাংলাদেশে দুটো সমুদ্র সৈকত রয়েছে। কক্সবাজার আর কুয়াকাটা। তবে কুয়াকাটা থেকে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত দেখা যায়। তাই ভালোবাসা দিবসে তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। তারা জানান, কুয়াকাটায় এসে তাদের খুবই ভালো লেগেছে। সমুদ্রে গোসল, ঘুরে বেড়ানো, কেনাকাটাসহ এখানকার সমুদ্র এবং সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছি। তবে এখানকার পরিবেশ আরো ভালো হবে এটাই তাদের প্রত্যাশা।
আবাসিক হোটেল হোটেল সৈকতের মালিক জিয়াউর রহমান জানান, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে তাদের হোটেলের সবগুলো রুমই বুকিং রয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম) এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, শুধু বিশ্ব ভালবাসা দিবস নয়, ফাল্গুন, সরকারি ছুটি ও ২১ ফেব্রুয়ারি বন্ধ উপলক্ষে এখন থেকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লেগে আছে। ইতোমধ্যে ভালবাসা দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন হোটেল তাদের নিজস্ব কিছু কার্যক্রম শুরু করছে। আশা করা হচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ মাসে পর্যটন ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারবে। এতে করে পর্যটন শিল্প বিকাশে অনেকটা সহায়ক হবে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ জানান, পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আবাসিক হোটেলের কক্ষ ৭০ ভাগ বুকিং রয়েছে। আশা করা যায় রমজানের আগ পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন আশানুরূপ থাকবে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক আ. খালেক জানান, আগত পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে টহল জোরদার করা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশও পর্যটকদের নিরাপত্তায় বিশেষ নজরদারি রেখেছেন।
(ঢাকা টাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন