কক্সবাজারে ভ্রমণে এসে ঠকছেন পর্যটকরা

ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার
 | প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৫৮

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় বাড়লে হোটেল-মোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও রেস্তোরাঁয় বেশি দামে খাবার বিক্রি শুরু হয়। কে কত বেশি টাকা হাতিয়ে নিতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় নামেন ব্যবসায়ীরা। ভাড়ার কোনো তালিকা না থাকায় হোটেলগুলোতে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ঠকছেন।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, হোটেল-মোটেলে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা রাখার নিয়ম থাকলেও তা দেখা যায়নি। কলাতলির বেশ কয়েকটি হোটেলে ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটন শহরে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো রুমই খালি নেই। আর প্রায় হোটেলে প্রতিটি রুম (নরমাল) সাড়ে ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকায় ভাড়া হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সব হোটেলের রুম বুকিং। তাই পর্যটকরা রুম পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত ভাড়া করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটি আমার জানা নেই। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিচ্ছে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত কেউ এসব কাজে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকার আশুলিয়া থেকে আগত পর্যটক শাহিন চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে কক্সবাজার আসছি। কোথাও রুম নেই। হোটেলে রুম না পেয়ে সমুদ্রপাড়ের কিটকটে ৩০ টাকা করে ভাড়া নিয়ে কোনোরকম বসে আছি। তবে কয়েকটা রুম পাওয়া গেলেও একেকটা রুম ৭/৮ হাজার চাই। অথচ সেই রুম স্বাভাবিক ১/২ হাজার বিক্রি করে।

সিলেট থেকে আসা রহিম, করিম ও হান্না বলেন, পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসছিলাম। এখানে কোথাও রুম খালি নেই। যেসব রুম খালি আছে সেগুলো কোনো মানের না। রুমগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। তার মধ্যে ৫ হাজার টাকা চাই। কি করবো বুঝতে পারছি না। কক্সবাজারে আসলে নীতিমালা করা দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ঢাকা থেকে কয়েকজন বন্ধু বেড়াতে এসেছি। এখানে এসে শহরের গণপূর্ত ভবনের পাশে গড়ে ওঠা গ্রিন কক্স এবং কক্স হিলটপ হোটেলে রুম ভাড়া নিতে গেলে প্রতি রুম সাড়ে ৮ হাজার চায়। একদিনের জন্য নাকি রুম ভাড়া দেওয়া মালিক পক্ষে নিষেধ করছে। রুমগুলো দেখে মনে হলো এটি সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা হবে। পর্যটক বেশি আসায় হোটেল ব্যবসায়ীরা এমন আচরণ করছে। এটা কখনো কাম্য নই।

কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল কক্স-টুডের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবু তালেব বলেন, রমজানের আগ পর্যন্ত প্রায় রুম বুকিং রয়েছে। পর্যটকদের ফাইভ স্টার মানের সেবা দিয়ে যাচ্ছি সবসময়।

এদিকে অনেক পর্যটক রুম না পেয়ে সড়কের পাশে সময় পার করছেন।

এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটক সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা বলেন, রুম ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগটি আমরা অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পর্যটক হয়রানি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি। কলাতলি ও হোটেল জোনে কেউ যাতে অপকর্ম বা জীম্মি করে হয়রানি করতে না পেরে সজাগ রয়েছে পুলিশ।

হোটেল-রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দাম ও নিম্নমানের খাবারের বিষয়ে তিনি বলেন, এরকম অভিযোগ পেলে সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটন নগরীতে কেউ হয়রানি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। শীতের শেষ মৌসুমে প্রচুর পর্যটক আসছে এটা বজায় থাকবে রমজান পর্যন্ত। কোন মানুষ-পর্যটক হয়রানি হলে সরাসরি ফোনে বা সরাসরি অভিযোগ দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :