বিলুপ্তির পথে দর্জি পাখি টুনটুনি

লংগদু (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৪

গাছের পাতা একসঙ্গে সেলাই করে বাসা তৈরি করার জন্য এই পাখি খুবই জনপ্রিয়। এই চড়ই জাতীয় পাখিকে বৈশিষ্ট্যমূলকভাবে দেখা যায় খোলা খামার জমিতে, ঝোঁপঝাড়, বন-বাদারে।

দর্জি পাখি নামটি এসেছে বাসা গড়ার ঢং থেকে। আগে গ্রামবাংলার আনাচে-কানাচে ঝোঁপঝাড়, বনজঙ্গলে দেখতে পাওয়া যেত কিন্তু এখন আর আগের মতো তেমনটা চোখে পড়ে না। ফুলের মধু খেয়ে বিভিন্ন ধরনের ফুলে ফুলে ঘুরে পরাগায়নেও সাহায্য করে থাকে এই পাখি।

ফসলের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে পরিবেশ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

অঞ্চলভেদে বিভিন্ন নামে ডাকা হয় এই টুনটুনি পাখিকে যেমন -টুনি, মধুচুষকি, দুগাটুনটুনি, বেগুন টুনটুনি , মৌটুসি, নীলটুনটুনি, দর্জি, মৌটুসকি ইত্যাদি।

এখন বিলুপ্ত প্রায় সেই ছোট নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি। পাখিদের মধ্যে বাবুই পাখিকে স্থপতি পাখি বলা হলেও এই ছোট পাখি টুনটুনির নির্মাণ শৈলী সম্পূর্ণভাবে আলাদা। আকারে এই ছোট পাখিটাকে যতটা আমরা চালাক ভাবি না কেন প্রকৃত পক্ষে ততটা চালাক নয়। সব সময় মানুষের খুব কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসে।

এরা চঞ্চল প্রকৃতির পাখি। এরা এক জায়গায় স্থির থাকতে চায় না। দূরন্ত বালকের মতো ছুটে চলে। সব সময় গাছের ডালে লাফালাফি করে। পিঠের উপরের লেজ নাড়িয়ে টুনটুন শব্দ করে উড়ে বেড়ায়। চোখে না দেখলে এই টুনটুনি পাখির ডাক শুনে মনেই করতে পারবেন না যে এরা আকারে এতই ছোট।

গ্রামগঞ্জের মানুষ খুব আদর করে একে দর্জি পাখি বলে ডেকে থাকে। এই দর্জি পাখির ডাক খুবই তীব্র ও অনেক দূর থেকে শোনা যায়। এই দর্জি পাখিটি ঠোঁট দিয়ে গাছের পাতা সেলাই করে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে খুবই মজবুত সুন্দর বাসা তৈরি করে থাকে। এরা সাধারণত ঝোপঝাড় জাতীয় গাছ বা ছোট মাঝারি উঁচু গাছের পাতায় বাসা বাঁধতে খুব পছন্দ করে। যেমন, খোকশা গাছ, লেবু, ডুমুর, সূর্যমুখী, সেঁকুন কাঠবাদাম ইত্যাদি। তবে এরা সবচেয়ে বেশি বাসা বাঁধতে পছন্দ করে সেঁকুন গাছে।

স্ত্রী ও পুরুষ উভয় মিলে গাছের ১-২টি পাতা দিয়ে সেলাই করে বাসা তৈরি করে থাকে। ১টি বাসা তৈরি করতে স্ত্রী ও পুরুষ টুনটুনির প্রায় ৪-৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এরা তুলা, সুতা, লতা-পাতা, গরু,ঘোড়া, মহিশের লেজের চুল, পালক মিশিয়ে দৃষ্টিনন্দন বাসা তৈরি করে থাকে।

টুনটুনি পাখির বাসা তৈরি ও প্রজনন মৌসুম মাঘ মাসের শেষের দিকে এবং ফাল্গুন – আশ্বিন মাসের মধ্যে বাসা বাঁধা শেষ হলেই ৪-৫টি ডিম পাড়ে । স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই ডিমে তা দিয়ে ১০দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটানোর পরে বাচ্চাসহ বাসা পরির্বতন করে।

বছরের প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী টুনটুনি ২-৩ বার ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। এ সময় কেউ টুনটুনির বাসার কাছে আসলে স্ত্রী ও পুরুষ মিলে এক সঙ্গে উড়া উড়ি এবং টুনটুন শব্দ করে ডিম ও তাদের বাসা রক্ষা করার জন্য। অনেক সময় বাসাসহ পাতা ঝড়ে পড়ে ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।

গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের টুনটুনির বাসার প্রতি প্রবল আকর্ষণ থাকে। আবার অনেক সময় গ্রামের ছেলে-মেয়েরা টুনটুনি পাখির বাসা, ডিম বা বাচ্চা নষ্ট করে। আজকাল টুনটুনি পাখির দৃষ্টিকাড়া বাসাও খুব তেমনটা চোখে পড়ে না। বন উজাড় মনোভাবের কারণে অনেক পাখিই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে। প্রকৃতিও হুমকির মুখে সবুজ বনায়নের অভাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

সিদ্ধিরগঞ্জে বস্তাবন্দি স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি

মফস্বল সাংবাদিকেদের ওয়েজ বোর্ডের আওতার আনার দাবি

আ.লীগ বিভ্রান্তিকর কথা বলে নিজেদের ভেতরকার অস্থিরতা আড়াল করছে: প্রিন্স

‘ওরাল ক্যান্সার’ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর

‘মনে হয় আত্মহত্যা করি, তাতে যদি বেঁচে যাই!’

ফেলোশিপে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন সাতক্ষীরা মেডিকেলের ডা. মাহমুদুল হাসান

গাজীপুরে দুর্ঘটনা: দুই ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

শ্রীপুরে তীব্র দাবদাহে ঝরে পড়ছে লিচু

চেয়ারম্যানের উঠান বৈঠকে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ বদির বিরুদ্ধে

ট্রাকের পেছনে মুরগিবোঝাই পিকআপের ধাক্কা, নিহত ২

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :