ক্যানসার ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করে কাঁচা মরিচ! কমায় কোলেস্টেরল
বাঙালি রান্নার অতি প্রয়োজনীয় উপাদান কাঁচা মরিচ। খাবারে স্বাদ বাড়ানো ও সুগন্ধের জন্য কাঁচা মরিচের জুড়ি নেই। বাঙালির পাতে ভাতের সঙ্গে মরিচ থাকবেই। বিশেষ করে কাঁচা মরিচ। অন্যদিকে শুকনো মরিচের ঝাঁজ বাড়ায় তরকারির স্বাদ।
শুধুই স্বাদ নয়, মরিচের আরও একটি গুণের খবর জেনে নিন। মরিচ খেলে আয়ু বাড়ে। তবে মরিচের ঝাল নাকি তারুণ্য ধরে রাখে, ক্যানসার দমন করতে সহায়তা করে এবং হৃদপিণ্ডকেও ভালো রাখে৷ এমনটাই বলছেন এখন বিশেষজ্ঞরা৷
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সায়েন্টিফিক সেশনের প্রাথমিক গবেষণা বলছে, প্রতিদিন কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ভালো। ক্যানসার বা কার্ডিও ভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কয়েক ধাপ কমে যাবে। মরিচের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ক্যানসার প্রতিরোধক গুণাগুণ।
গবেষণা চালানো হয়েছে আমেরিকা, চীন, ইতালি, ইরানের প্রায় ৫ লাখ ৭০ জনের উপর। তাদের স্বাস্থ্য এবং খাদ্যাভাস সংক্রান্ত রেকর্ড বা যা ডায়েট বলে পরিচিত তা খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা। যাদের নিয়মিত মরিচ খাওয়ার অভ্যাস আছে এবং যাদের নেই, তাদের মধ্যে ফারাক খতিয়ে দেখা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা রোজ কাঁচা মরিচ খান তাদের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ২৬ শতাংশ কমেছে। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমেছে ২৩ শতাংশ এবং অন্যান্য যেসব রোগে মানুষের মৃত্যু হতে পারে, সে ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমেছে ২৫ শতাংশ।
আমেরিকার ওহায়োর ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক হার্টের কার্ডিওলজিস্ট বো জু বলেছেন, ‘এটা দেখে আমরা নিজেরাই খুব অবাক হয়েছিলাম যে কাঁচা মরিচ সব ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
কাঁচা মরিচে থাকা একাধিক উপকারী উপাদান রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে ফাইব্রিনোলেটিক অ্যাকটিভিটিকে বাড়িয়ে দিয়ে মস্তিষ্কে যাতে ব্লাড ক্লট না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে মরিচ। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
কাঁচা মরিচে প্রচুর ডায়াটারি ফাইবার, নিয়াসিন, থিয়ামিন, রাইবোফ্লবিন, আয়রন, ফলেট, ম্যাঙ্গানিজ এবং ফসফরাস রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, বি-৬, সি, কে, পটাশিয়াম, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান।
সুগার নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রয়েছে কাঁচা মরিচের। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী। মরিচে থাকা একটি উপাদান রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কাঁচা মরিচ ছেলেদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে স্নায়ুর বিভিন্ন সমস্যা কমে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঁচা মরিচ। এর মধ্যে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও জিরো ক্যালোরি। মরিচ খেলে কারও পরিপাক প্রক্রিয়া অন্তত তিন ঘণ্টা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেডে় যায়। এতে দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য করে। এছাড়াও কাঁচা মরিচ দ্রুত খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে কাঁচা মরিচ। হঠাৎ ঠাণ্ডা লাগার ধাত ও সাইনাসের সমস্যা থেকে বাঁচায় কাঁচা মরিচের থাকা ক্যারাসাসিন। কাঁচা মরিচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি শরীরকে জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। ফলে নিয়মিত কাঁচা মরিচ খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/এজে)