কোনো একটা জিনিস না খেলে রোজা হবে না এই মানসিকতা পাল্টাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
সিয়াম সাধনার মাস রমজানে বাজারে খাদ্যপণ্যের কৃত্রিম চাহিদা যেন না বাড়ে সেজন্য সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন ও সংযম পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো একটি খাবার না খেলে যেন ইফতার বা রোজা হচ্ছে না, জনগণকে এই মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজান তো হলো কৃচ্ছ্রসাধনের মাস। অনেকের দেখি রমজানের সময় যেন খাওয়াটা একটু বেড়েই যায়। আসলে সেজন্য তো রমজান নয়, রমজান হলো সংযমের মাস, সংযম করতে হবে। এখন বিশেষ কোনো একটা জিনিস না খেলেই রমজান আর হবে না, রোজা রাখা যাবে না বা ইফতার করা যাবে না, এ মানসিকতা বদলাতে হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
তিনি বলেন, মোবাইল কোর্টসহ প্রতিটি এলাকা পরিদর্শন করা হয়, ব্যবস্থা নেওয়া হয়, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। তারপরও যদি কেউ এভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ায়, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনগণকে কৃচ্ছ্রসাধনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যা পাওয়া যায়, তা দিয়েই কিন্তু রোজা করতে পারি। এটি না খেলে চলছেই না, এরকম তো কোনো কথা নেই। অন্য সময় মানুষ যেভাবে খায়, সেভাবেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে তো আর একটি জিনিসের জন্য কান্নাকাটি শোনা যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা ইদানীং দেখেছেন, প্রতিটি জিনিসের দাম কিন্তু কমেছে। একেবারে কমেনি, তা নয়। কৃষকের উৎপাদিত পণের দাম যদি বেশি কমে যায়, তাহলে কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। আবার যদি দাম বেশি বেড়ে যায়, তাহলে যারা নির্দিষ্ট আয়ের লোক, তাদের জন্য কষ্ট হয়, ভোক্তার জন্য কষ্ট হয়।
‘কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায়, কৃষক যেন উৎপাদন বাড়ায়, সেদিকে যেমন আমাদের লক্ষ্য রাখতে হয়, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করলে ভোক্তারাও যেন সহনশীল দামে কিনতে পারে সে ব্যবস্থাটার দিকেও আমাদের দৃষ্টি দিতে হয়। এ বিষয়ে আমাদের সরকার যথেষ্ট সচেতন’—যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য যেন বেশি ব্যবহার করতে পারি, যেন বেশি উৎপাদন করতে পারি, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত, যত্ন নেওয়া উচিত। বাজারের ক্ষেত্রে যা আমি বলব, সংসদ সদস্যরা আছেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আছেন, শুধু সরকারই দেখবে তা তো না, তাদেরও দায়িত্ব আছে।
অসাধু ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে আপনারা সবাই সহযোগিতা করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে অসদুপায়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে পারবে না। সেক্ষেত্রে আমি জনগণকেও আহ্বান করব, তারাও যেন নজর রাখে, তাহলে কিন্তু আরও সহজ হয়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি, কঠোর পদক্ষেপ নেব। এমনকি মোবাইল কোর্ট বসিয়েও আমরা শাস্তি দিচ্ছি, গ্রেপ্তার করছি, মামলা করছি, আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।
(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/ইএস)