ব্রাউন ফুড অনেক বেশি পুষ্টিকর, জানুন আসল সত্য

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:০০

স্বাস্থ্য সচেতন নিয়ে আমরা সবাই বেশি সচেতন। স্বাস্থ্যকর খাবার কোনটা, আর কোনটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এ নিয়ে সবার মধ্যে চিন্তা কাজ করে। স্বাস্থ্যকর খাবার কোনটা খাবেন আর কোনটা খাবেন না এসব নিয়ে সময় চলে যায়। তবে ব্রাউন ফুড বনাম সাদা খাবারের লড়াই চলছে বহুকাল থেকেই। যদিও অনেকেই বলেন যে দুটো খাবারেই খাদ্যগুণ একই রয়েছে। আবার সেখানে কেউ কেউ যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে ব্রাউন ফুডই বেশি স্বাস্থ্যকর। খাবারের পুষ্টিগুণ তার রঙের ওপর নির্ভর করেনা, বরং এটি কোথায় এবং কীভাবে উৎপন্ন হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এর সত্যতা কতোটুকু? পুষ্টিবিদরা কি বলছেন এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

বাদামি চাল না সাদা চাল

বাদামী চাল প্রাকৃতিক এবং অপরিশোধিত। সাদা চালের চেয়ে বাদামী চালের উপকারিতা অনেক বেশি। সাদা চালের তুলনায় বাদামী চালের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এটি চিবানো সহজ এবং এতে বাদামের স্বাদ পাওয়া যায়।

সমস্ত সাদা চাল পালিশ করার আগে বাদামীই থাকে। পালিশ ছাড়া যে চাল, সেটিকেই বাদামী চাল বলে বিক্রি করা হয়। বাদামী চাল একটি সম্পূর্ণ শস্য, কিন্তু সাদা চাল প্রক্রিয়াজাত। যখন চালকে পালিশ করা হয় তখন সেখান থেকে তুষ ও অঙ্কুরের অংশটি বা দেওয়া হয়। চালের অঙ্কুরিত অংশে প্রচুর পরিমান খনিজ এবং তুষে অনেকটাই ফাইবার থাকে। পালিশের পর সাদা চাল থেকে ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ বের করে দেওয়া হয়।'

১৯০০ দশকের প্রথম দিকে বেশি পরিমান সাদা চাল খাওয়ার জন্য বেরিবেরি রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। কারণ তাতে মানুষের দেহে ভিটামিন বি১-এর ঘাটতি দেখা দেয়। বিশেষ করে যাঁরা মূলত ভাত খান তাঁদের ক্ষেত্রে এটি বেশি করে দেখা দেয়। সুতরাং সাদা চালের চেয়ে বাদামী চালকে প্রাধান্য দেওয়া হেল্থ ট্রেন্ড নয়, এটি একদিক থেকে আমাদের শিকড়ে ফিরে যাওয়ার উপায়, যেখানে আমরা কম প্রক্রিয়াজাত চাল খাই।

পুষ্টিবিদরা জানান, সাদা চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭০ শতাংশ এবং বাদামী চালে প্রায় ৫০ শতাংশ। এর অর্থ হল, সাদা চালের তুলনায় বাদামী চাল রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বেশি বাড়ায় না, তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি ভাল বিকল্প। কেউ কেউ শুধু সাদা চাল খেতে পছন্দ করেন। তবে তাতে শরীরে ফাইবারের প্রয়োজনীয় পরিমাণ পৌঁছায় না। পুষ্টিবিদের মতে, ডায়েটে এমন কোনও খাবার রাখা উচিত নয়, যাতে শুধুই ক্যালোরি বাড়ে।

বাদামি রুটি নাকি সাদা রুটি

পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যসম্মত রুটি কখনোই এর রঙের ওপর নির্ভরশীল নয়। রুটির খাদ্যগুণ নির্ভর করে সেটা কিভাবে এবং কী থেকে তৈরি তার ওপরে। আটা বা ময়দার পেছনে শস্যের গুণগত মান, আটা বা ময়দার ধরন এবং রুটিটি কতোটুকু স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে তৈরি তার দ্বারাই মূলত রুটির পুষ্টিগুণ নির্ণয় হয়।

তাই রুটির রঙের ওপর কখনো তার পুষ্টিগুণ নির্ভর করেনা। স্বাস্থ্যকর রুটি খেতে চাইলে আপনাকে টক স্বাদযুক্ত রুটি, অংকুরিত শস্যের রুটি অথবা পরিপক্ক শস্য থেকে তৈরি আটার রুটি খেতে হবে। সাদা-বাদামির কোনোকিছু নির্ভর করে না।

বাদামি চিনি না সাদা চিনি

সাদা চিনি বনাম ব্রাউন চিনি সাদা চিনি ভাল না ব্রাউন চিনি ভাল? এই নিয়ে বাজারে বেশ বড়রকমের বিতর্ক রয়েছে। সাদা আর বাদামি চিনিতে ক্যালোরির পরিমাণ একই থাকলেও সাদা চিনির থেকে বাদামি চিনি একটু হলেও উপকারী। কারণ বাদামি চিনি অপরিশোধিত চিনি। এতে গুড় রয়েছে, যা ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম, আযরন আর ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে সরাসরি শরীরে সরবরাহ করে। তবে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী চিনির ব্যবহার করা উচিত।

সাদা ডিম নাকি বাদামি ডিম

সাদা ডিম বনাম ব্রাউন ডিম সাদা মুরগির ডিম সাদা হয় আর বাদামি মুরগির ডিম বাদামি হয়, কিন্তু এই দুই ধরনের ডিমের মধ্যে সেরকম কোনও পার্থক্য নেই। দুধরনের ডিমই সমান পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রোটিন ও ভিটামিন বি দুধরনের ডিমের মধ্যেই রয়েছে। ব্রাউন ডিম অতিরিক্ত ওমেগা ৩ শরীরে সরবরাহ করে যা হৃদরোগের ঝুঁকিকে অনেকটা কমিয়ে দেয়।

রঙ মূলত মুরগির জাতের ওপর নির্ভর করে। খোসা সাদা, বাদামি নাকি ক্রিম রঙের হবে সেটা সম্পূর্ণ মুরগির জাতের ওপর নির্ভর করে।

সাদা বা হালকা রঙের কানের লতি বিশিষ্ট সাদা পালক সমৃদ্ধ মুরগির ডিম সাদা হয় এবং কানের লতি লাল এবং পালক বাদামি এমন জাতের মুরগিই বাদামি ডিম দেয়। তাই ডিম কেনার সময় সাদা না বাদামি সেটা দেখে খাদ্যগুণের তারতম্য মনে করা ভুল।

(ঢাকাটাইমস/২৯ ফেব্রুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :