কেন এবং কোন বয়সে হয় অ্যাজমা? চিকিৎসাই বা কী?

অ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালির অসুখ। যদি কোনো কারণে শ্বাসনালি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয়, তখন বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়।
চিকিৎসকদের মতে, বেড়ে যাওয়া পলিউশন বা বায়ু দূষণ অ্যাজমা রোগের কারণ। জেনেটিক কারণে অনেকের অ্যাজমা হয়। আবার বংশে কারও এ রোগ থাকলে আপনিও শিকার হতে পারেন।
বেশি কাজ করলে বা একটু হাঁটাহাটি এবং দৌড়াদৌড়ি করলে অনেকেই খুব হাঁপিয়ে ওঠেন। ভাবেন দুর্বলতার কারণে এমনটা হচ্ছে। কিন্তু ধারণা একদমই ভুল। এগুলো হতে পারে অ্যাজমার লক্ষণ।
হাঁপানি কোন সময় কোন বয়সে হয়?
আসলে অ্যাজমা বা হাঁপানি হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। এ রোগ যেকোনো বয়সিদের হতে পারে। আবার অ্যাজমা হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো ঋতুও নেই। অনেকে মনে করেন, শীতকালে অ্যাজমা বেশি হয়। এ ধারণাও ঠিক নয়। যে কোনো সময় এটি হতে পারে। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এর প্রভাব বেশি চোখে পড়ে।
অ্যাজমা হওয়ার কারণ?
আমাদের ফুসফুস কয়েকটি নালি দ্বারা গঠিত। সঙ্গে আছে অনেক পেশি। কোনো কারণে এই পেশি ফুলে গেলে রক্ত চলাচলে অসুবিধা হয়ে থাকে। ধুলা, দূষণের কারণে পেশিগুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়, ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সরবরাহ হয় না। ফলে নিশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। যাদের এই সমস্যা আছে বহন করতে হবে আমৃত্যু।
ধীরে ধীরে অ্যাজমা রোগের প্রভাব বাড়ছে- এমনটাই বলছেন আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব অ্যালার্জির অধ্যাপকরা। অ্যালার্জি পার্টনারদের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাককান বলছেন, পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যাজমা রোগির সংখ্যা বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু রোগীর ওপর পরীক্ষা করেছেন এবং জানাচ্ছেন যে, ১০৭০ জন রোগীর মধ্যে বেশিরভাগের বয়স ৪৩-৫০ এর মধ্যে। তাদের মধ্যে মহিলার অনুপাত ৭০.৫ শতাংশ। এর মধ্যে ১৩.৮ শতাংশ রোগীর অবস্থা ঠিকঠাক, ২৬ শতাংশ মাঝারি, ৪৫.৪ শতাংশের অবস্থা খুবই খারাপ।
অ্যাজমার বিষয়ে সতর্কতা ও চিকিৎসা
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, অ্যাজমা রোগীদের আলো বাতাসযুক্ত ঘরে থাকতে, বদ্ধ ঘর তাদের জন্য খারাপ ফল দিতে পারে। রাস্তায় বেরোনোর সময় মাস্ক সঙ্গে রাখুন, নাক মুখ ঢেকে রাখুন। নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে নিন বাড়তি সতর্কতা। শীত ও বর্ষাকালে গরম জিনিস বেশি ব্যবহার করুন। নিজের ব্যবহৃত জিনিসগুলো প্রয়োজনে রোদে দিতে পারেন।
অ্যাজমা বা হাঁপানি রুখতে জীবনযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যাভাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। অ্যালার্জি হয় বা হতে পারে এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন বা খেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই খাবেন। প্রয়োজনে ইনহিলার ব্যবহার করতে পারেন।
(ঢাকাটাইমস/০৩মার্চ/এজে)

মন্তব্য করুন