৫০০ কোটি টাকা হাতানোর চেষ্টা প্রতারক চক্রের, এনএসআই ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ৯

রংপুর ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৮ | প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫৮

রংপুর বিভাগের আট জেলায় সমাজিক প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির নামে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফাঁদ পাতে স্থানীয় একটি এনজিও। দরপত্র আহ্বান করে শিডিউল বিক্রিসহ নানা উপায়ে ইতোমধ্যে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার তহবিলও সংগ্রহ করে ‘অগ্রসরমান আদর্শ যুব কর্ম সংস্থা’ নামক ওই প্রতিষ্ঠান। অবশেষে এনএসআই ও পুলিশের যৌথ অভিযানে প্রতারক চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্য ও সমন্বিত অভিযানে গত সোমবার বিকালে নগরীর গোমস্তাপাড়ায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় উদ্ধার করা হয় প্রতারণারে কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটক-কম্পিউটারসহ নানা সরঞ্জাম।

রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি (ডিবি) শাহ নুর আলম পাটোয়ারী বলেন, এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার আমরা রংপুর মহানগরীর গোমস্তাপাড়া এলাকায় আদর্শ যুব কর্ম সংস্থার অফিসে অভিযান চালাই। সেখান থেকে নয়জনকে গ্রেপ্তার করি। এ সময় ওই অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ডেস্কটপ কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, বিভিন্ন দলিলপত্র/ডকুমেন্টস, অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা খাতা ও বিভিন্ন রেজিস্টার জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জেলা কো-অর্ডিনেটর মো. রিয়াদ হোসেন, সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার আচার্য, উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. ফজলে রাব্বি, হিসাবরক্ষণ অফিসার প্রদীপ রায়, সহকারী উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. গোলজার হোসেন, কম্পিউটার অপারেটর মো. নজরুল ইসলাম ও মো. আলমগীর হোসেন, মালি মো. মাহবুব হাসান লিমন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এনএসআইয়ের সূত্র জানায়, সংস্থাটি ইনট্রিগ্রেটেড রুর‌্যাল ডেভলোপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইআরিডিপি) কর্মসূচির মাধ্যমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৫৩৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির প্রকল্পের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাস্তবায়নে ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হিসাবে ৫৩৫টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪৫৮ কোটি ২২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এজন্য সংস্থাটি ২০২২ সালে দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রের শিডিউলের মূল্য ধরা হয় ৪০ হাজার টাকা।

দরপত্রে বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রথম ধাপে ২৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ছাদ নির্মাণের পরে ২৫ শতাংশ ও তৃতীয় ধাপে কাজ শেষ হওয়ার পরে ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা হবে। প্রথম ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করবে তুরস্ক ও ফ্রান্সের দাতা সংস্থা, অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ মূল্য কাজ শেষ হওয়ার পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পরিশোধ করা হবে মর্মে সংস্থাটি প্রচারণা চালায়। এরজন্য তারা প্রচারণাপত্রে সরকারি দপ্তরের মনোগ্রামও ব্যবহার করে। এরই মধ্যে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা তহবলি সংগ্রহ করে তারা।

এনএসআই সূত্র জানিয়েছে, সংস্থাটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন নেই। ছিল না কোনো বৈধ কাগজপত্র। তবুও তারা সকল প্রচার প্রচারণায় সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রজেক্ট প্রোপোজালও ছিল না তাদের। এমনকি দরপত্র আহ্বানের যথাযথ নিয়মও অনুসরণ করেনি তারা। এছাড়াও তারা প্রকল্পের নামে জমি ক্রয়েও অনিয়ম করেছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :