কেন্দুয়ায় হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি, অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা

​​​​​​​কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি:
| আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪, ২১:২৬ | প্রকাশিত : ২১ মার্চ ২০২৪, ২১:২১

হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি, এটা নতুন কিছু নয়, হরহামেশাই এটি দেখা যায় দেশের আনাচে-কানাচে বাজারগুলোতে। তবে চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় পৌর সদরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী স্থানীয় মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুরে পর্যন্ত কেন্দুয়া পৌরসভার সাউদ পাড়া, চিরাং মোড়, সাজিউড়া মোড়, মেইন বাজারে ব্যবসায়ী স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করার বিষয়টি জানা গেছে।

পৌরসভার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাজারের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে চিরাং মোড় হয়ে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত প্রতিটি দোকানে দুজন মিলে একটি বড় হাতি আর একটি বাচ্চা হাতি নিয়ে হানা দেয়। দোকানপ্রতি কমপক্ষে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতি নিয়ে দোকানের সামনে এসে তারা দাঁড়ান, টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে হাতি সরানো হয় না। এভাবে টাকা আদায়ের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রয়-বিক্রয়েও সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে টাকা আদায়ের পরিমাণও বেড়ে যায়।

মাসুদ আর্ট অ্যান্ড জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী আব্দুআল্লাহ আল মাসুদ জানান, হাতিকে টাকা দিতে দেরি করলে, দোকানের সামনে থেকে হাতি সরায় না। পাশাপাশি হাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দোকানের মধ্যে হাতি ঢুকে যায়।

বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করা হয়। বিষয়টি দেখার কেউ নেই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পৌর সদরের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বড় হাতির পিঠে বসে একজন হাতিটিকে পরিচালনা করছেন, বাচ্চা হাতিটি চলছে বড় হাতিটির সঙ্গে। তার এই কাজে সহযোগিতা করছেন তারই এক সহযোগী। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না।

হাতির মালিক জহিরুল বলেন, হাতির খাবারের জন্য অনেক খরচ, কি করব ! বাধ্য হয়ে দোকানে দোকানে যাই। যে যা দেয় তা নিয়েই চলে আসি। জোর করে টাকা আদায় প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, আমরা জোর করে কোনো টাকা নিচ্ছি না, খুশি হয়ে যে যত পারে তাই আমরা নিচ্ছি।

বাজারের আরো দুই ব্যবসায়ী বলেন, প্রায় প্রতিদিনই অনেক খাতে টাকা দিতে হয়। বর্তমানে হাতিকেও দিতে হচ্ছে। বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক।

উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম আকন্দ বলেন, ‘বনের পশু পালনের জন্য নির্দিষ্ট আইন আছে। সার্কাস দলে পালনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। তবে বন্য এসব পশুর যাবতীয় দায়িত্ব মালিকের। এভাবে টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। বড় হাতি অথবা বাচ্চা হাতি দিয়ে এভাবে টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, ‘এভাবে বন্যপশু দিয়ে টাকা আদায় করা আইনসিদ্ধ নয়।এভাবে টাকা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

(ঢাকা টাইমস/২১মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :