বঙ্গবন্ধুর দেহরক্ষীর পরিবারের কাছে টাকা দাবি, ওসি প্রত্যাহার

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৯:৫৬ | প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৯:৫৩

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেহরক্ষীর পরিবারের কাছে টাকা দাবি করায় গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে জমি বিক্রেতার কাছ থেকে কয়েক মাস সময় চেয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এক আদেশে তাদের দুজনকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

প্রত্যাহার হওয়া দুজন হলেন- গাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আল আমিন।

শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টাস অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেহরক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মোহাম্মদ ইসলামের পরিবার গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার বাদশা মিয়া স্কুল রোড এলাকায় জমি কিনে বসবাস করে আসছেন। গত ৫ মাস আগে মহানগরীর মোগরখাল এলাকার আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকায় ৮ শতাংশ জমি কেনেন মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মো. আ. জলিল। ২৫ লাখ টাকার মধ্যে ওই জমি নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা পেয়ে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাকি রেখে জমির রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন করেন। কথা ছিল ২ থেকে ৩ মাস পর জমির বকেয়া ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু মো. আ. জলিল অন্য আরেকটি জমি বিক্রি করে ওই টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও তিনি ওই জমি বিক্রি করতে না পেরে জমির বাকি টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে পারেননি। এ নিয়ে জমি বিক্রেতার সঙ্গে মনোমালিন্য হলে একটি উকিল নোটিশ পাঠান আব্দুল মান্নান। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জমি বিক্রেতা আব্দুল মান্নান গাছা থানায় মো. আ. জলিলকে বাদী করে একটি অভিযোগ দেন।

মো. আ. জলিল জানান, অভিযোগটি তদন্ত করতে ১১মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বাড়িতে সাদা পোষাকে যান গাছা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল আমিন। বাড়িতে যাওয়ার পরই এএসআই আল আমিন হন্য হয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় তিনি বাথরুমে থাকায় তার ছেলে এগিয়ে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ছেলের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। পরে তিনি বেরিয়ে আসলে তার সঙ্গেও বাজে আচরণ ও গালিগালাজ করা হয়। পরে তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে এএসআই আল আমিন তার কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে তিনি জমি বিক্রেতার কাছ থেকে কয়েক মাসের সময় নিয়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার সঙ্গে আরও খারাপ ব্যবহার করেন এএসআই। তিনি আরও জানান, তাকে গাছা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গাছা থানার নীচ তলায় নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কে বসিয়ে রেখে তার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা হয়। এক পর্যায়ে জলিলের গায়ে হাত তুলেন এএসআই আল আমিন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলমকে জানালে তিনি কোনো প্রতিকার না করে তাকে পাওনাদারের টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে বলেন। পরদিন ১২ মার্চ ব্যবসায়ী মো. আ. জলিল বিষয়টি গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহাবুব আলমকে মৌখিক ভাবে এবং পরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।

ব্যবসায়ী মো. আ. জলিল বলেন, আমি আত্মবিশ্বাস নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি এর সঠিক বিচার করেছেন। আমি এরচেয়ে আর বেশি কিছু চাই না।

উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টাস অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ জানান, ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার গাছা থানার ওসি মো. শাহ আলম এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আল আমিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

(ঢাকা টাইমস/২৯মার্চ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :