ঈদে রমনায় দর্শনার্থীর ভিড়
ঈদের দিনে মানুষ নামাজ আদায় করে শিশুদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়। চিড়িয়াখানা, পার্কগুলোয় মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব স্থানে লোকে লোকারণ্য। উৎসবের এই আমেজই বলে দেয় আজ ঈদ। পৃথিবীর অন্য সব উৎসব থেকে ঈদ উদযাপনের এই উৎসব বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।
হাফিজ জুনায়েদ কাজ করেন নিউমাকেটের একটি বিপণি বিতানে। চাঁদ রাতে (বুধবার) প্রায় ভোর পর্যন্ত দোকান খোলা ছিল। তাই ঈদে যাওয়া হয়নি গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর ইউনিয়নে। সকালে ঈদের নামাজ পড়ে বন্ধুদের সঙ্গে বের হয়েছেন ঘুরতে। লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল ঘুরে এসেছেন রমনা পার্কে। পরিবার ছাড়া ঈদ করতে কষ্ট হচ্ছে।
জুনায়েদ বলেন, “বাবা বলেছে, ‘রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ভালো না। তুমি পরে আসো। এক্সিডেন্ট হয় ফাঁকা রাস্তায়, গাড়ি জোরে চলে। টিকেট পাইবা না’। এজন্য আজকে রওনা করতে চেয়েও করলাম না।”
তার সঙ্গে থাকা বন্ধু সোলেমান ফুটপাতের হকার। পুরো রমজান তিনি নিউমার্কেটের দোকানে দোকানে কখনো খেজুর, কখনো মুড়ি চপ, কখনো পানি কখনো শরবত বিক্রি করে কাটিয়েছেন। লাভ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।
সোলেমানের বাবা মারা যাওয়ার পর মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। তাই যোগাযোগ নেই। তিনি থাকেন কামরাঙ্গীর চরে নানীর কাছে। আজ ঈদ। তাই নানীর কাছে মূলধন রেখে পাঁচ হাজার টাকা নিজের জন্য নিয়ে সকালে ঈদের মার্কেট করেছেন তিন হাজার টাকার। আর দুই হাজার টাকা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছেন।
সোলেমান বলেন, “প্রতি বছরই তো ঈদ আসে। আমি এখানেই থাকি আর সব বদল হয়। আজকের মতো ছোটবেলায় যদি টাকা ইনকাম করতে পারতাম তাহলে মাকে কোথাও যাইতে দিতাম না।”
‘মানুষ মায়ের সঙ্গে ঘুরতে আসে বাপের সঙ্গে আসে ঘুরতে ঈদের দিন। এই দৃশ্যটা দেখতেই পার্কে আসেন’ সোলেমান।
পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর মগবাজারে থাকেন তৌহিদুল ইসলাম। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করেছেন। ছিল অফিসও। তাই পরিবারকে খুব কম সময় দিতে পেরেছেন। যেহেতু কোরবানির ঈদ গ্রামে করেন তাই রোজার ঈদ ঢাকাতেই কাটে। এবার অনেক বেশি দিন ছুটি পেয়েছেন তাই পরিবার নিয়ে রমনায় এসেছেন। এরপর গাজীপুর সাফারি পার্ক সহ বাকি ছুটির দিনগুলো একেকটা র্দশনীয় স্থান বাচ্চাদের ঘুরিয়ে দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান।
রিমিন সুলতানা স্বামী ও সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন রমনায়। পেশায় তারা দুজনই সরকারি চাকরিজীবী। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, “ঈদের দিনে নামাজ আদায় শেষে খাওয়াদাওয়া করে সবাই ঘুরতে বের হবেন, এটাই স্বাভাবিক। নগরের একজন মানুষ, তাকে তো টিকে থাকতে সারা বছর কাজ করতে হয়। ঈদের দিনে মানুষ প্রিয়জনের বাসায় ঘুরতে যান, ছেলেমেয়েদের নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে যান, এটাই হয়ে থাকে। তাই আমরাও ঘুরতে এসেছি।”
(ঢাকাটাইমস/১১এপ্রিল/এফএ)