অন্ধকারের শক্তিকে পরাজিত করার আহ্বান মঙ্গল শোভাযাত্রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭| আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫৫
অ- অ+

অন্ধকারের শক্তিকে পরাজিত করে আলোর আহ্বান জানিয়ে বর্ষবরণ উৎসবের মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষ হয়েছে। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’। বর্ষবরণের প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হয়েছে।

রবিবার সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শাহবাগ মোড় ঘুরে রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের সামনে দিয়ে শিশুপার্কের মোড় ঘুরে আবার শাহবাগ দিয়ে টিএসসি চত্বর ঘুরে চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হয় বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রা।

মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরুর আগে সকাল থেকে শাহবাগ এবং চারুকলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য বাঙালিয়ানা সাজে হাজারো উৎসবপ্রেমী মানুষ শাহবাগ থেকে চারুকলা পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করেছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বিদেশিও উপস্থিত হয়েছেন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে।

শোভাযাত্রা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল বেশ তৎপর। শোভাযাত্রার শুরুতে ছিল র‌্যাবের মোটরসাইকেলের টহল টিম। এরপর সোয়াটের সদস্যরা। তারপরে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। একাধিক ড্রোন উড়ছিল। ওয়াচ টাওয়ার থেকেও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক ধাপের পর মূল শোভাযাত্রা হাঁটতে শুরু করে।

শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদসহ বিশিষ্ট অতিথিরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিল্পী ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই শোভাযাত্রা নববর্ষের পুরো উৎসবকেই বর্ণাঢ্য করে তোলে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালে বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখের এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা থেকে ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলার লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন উপকরণ, গ্রামীণ জীবনের অনুষঙ্গ, পশুপাখি, ফুল এসবের প্রতীক ও রকমারি মুখোশ বহন করা হয়। এবারও বড় আকারের চাকা, পাখি, ফুল, হাতি, বনরুইয়ের প্রতীক ছিল। আর ছিল বড় আকারের রাজা-রানি ও হাতে বহন করার জন্য ছোট আকারের প্যাঁচা, মাছ, পাখির শতাধিক মুখোশ।

চারুকলা থেকে শুরু করে শাহবাগ মোড়ের দুই পাশেও কয়েক হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে শোভাযাত্রা উপভোগ করেন। পুরুষদের নানা রঙের পাঞ্জাবি আর নারীদের শাড়িতে শোভাযাত্রা আরও রঙিন হয়ে ওঠে। ঘণ্টাব্যাপী এই শোভাযাত্রা টিএসসি মোড় ঘুরে শোভাযাত্রা শেষে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। এই মূল চেতনা ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন। এই মঙ্গল শোভাযাত্রা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বাঙালি সংস্কৃতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “প্রতিবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। অন্ধকারকে কাটিয়ে আলোর পথে যাব, এটি আমাদের প্রত্যাশা। তরুণসমাজ মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। “তিমিরবিনাশী” স্লোগান অন্তরে ধারণ করে হবে অগ্রযাত্রা।”

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এএম/কেএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কবিরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
আজ রাতে এক মিনিট অন্ধকারে থাকবে সারা দেশ, কেন এ ‘ব্ল্যাক আউট’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নে যা বললেন মুখপাত্র
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা