ট্রেনভাড়া বাড়ছে না, ভর্তুকি প্রত্যাহার হচ্ছে: রেলমন্ত্রী

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে না দাবি করে রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে এতদিন দূরত্বের যাত্রীদের যে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকালে রাজবাড়ী শহীদ খুশি রেলওয়ে মাঠে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যাত্রীদের যে ভর্তুকি দিয়ে থাকি, সেটি ঈদের আগে প্রত্যাহার করা হবে না। আমরা কথা রেখেছি। ঈদের পরে আমরা এ ভর্তুকি প্রত্যাহার করছি, তা আগামী ৪ মে থেকে কার্যকর হবে। মূলকথা ভাড়া বৃদ্ধি হচ্ছে না। যেমন ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভাড়া বাড়ছে না। আমরা দূরত্বের ওপরে যে ভর্তুকি দিতাম, এইটা প্রত্যাহার করছি। এটা ভাড়া বৃদ্ধি নয়।’

গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে ট্রেনের ভাড়া বাড়েনি দাবি করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রেলের ভাড়া বৃদ্ধির চেষ্টাও করছি না। তবে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করা উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার অর্থে বলছেন যে, এই মুহুর্তে জনগণের ওপরে কোনো চাপ দেওয়া যাবে না। আমরা সে কারণেই শুধু ভর্তুকিটা প্রত্যাহার করছি। আসলে ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি।’

রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিদ্ধার্থ ভোমিক, রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী প্রমুখ।

রেলমন্ত্রী গত ১৫–২০ বছরের মধ্যে ট্রেনের ভাড়া না বাড়ার দাবি করলেও এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়িয়েছিল রেলওয়ে। ২০১২ সালের অক্টোবরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফায় রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এর প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের শেষার্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন সেতু ও ভায়াডাক্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তখন রেলের যাত্রী ও মালামাল পরিবহন হতো সক্ষমতার তুলনায় কম। যাত্রী ও মালামাল পরিবহন আকৃষ্ট করতে ওই সময় দূরত্ব ও সেকশনভিত্তিক রেয়াত সুবিধা চালু করা হয়। এর মধ্যে সেকশনভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহার করা হয় ২০১২ সালে। দূরত্বভিত্তিক রেয়াত সুবিধার কারণে দূরপাল্লার ভ্রমণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ হয় দূরত্বের তুলনায় কম।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এলএম/কেএম)