নওগাঁয় বোরো ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
  প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৮
অ- অ+

উত্তর জনপদের শস্যভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন বোরো ধানের সবুজ আভা কেটে হলুদ বরণ ধারণ করতে শুরু করেছে। পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান। বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। পাকা ধান ঘরে তুলতে জায়গা প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

কৃষকরা বলছেন ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে প্রায় শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল রয়েছে। এ কারণে ধানখেতে রোগ-বালাই ছিল কম। ধান কাটা-মাড়াই পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবার উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ধান নির্ভরশীল এলাকা হিসেবে আত্রাইয়ের প্রধান আবাদই বোরো ধান। বিশেষ করে উপজেলার মানিয়ারী, বিশা, ভোঁপাড়া, শাহাগোলা ও পাঁচুপুর ইউনিয়ন বোরো ধানের জন্য খ্যাত। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়েনে বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ধান বপনের শুরু থেকেই অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় এবারের বোরো ধান মাঠে মাঠে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু এলাকায় আগাম জাতের ধান পাকতেও শুরু করেছে। অধিকাংশ এলাকার মাঠজুড়ে সোনালী রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে বোরো ধানের শীষ। আর এ সোনালী শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আজম প্রামানিক, শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার, বজ্রপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, মূলত আমাদের এলাকার প্রধান আবাদই হলো বোরো ধান। বোরো ধানের মধ্যে আমরা জিরাসাইল ধানের আবাদ সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে করে থাকি। কিছু কিছু জমিতে নতুন অন্য জাতের ধানের চাষও করা হয়েছে। শুরু থেকেই আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের শীষগুলো দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবারে বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশাবাদী।

কৃষকরা আরও বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আগাম রোপণকৃত ধান ৮-১০ দিনের মধ্যে কাটামাড়াই শুরু হবে। কাটামাড়াই পুরোদমে শুরু হতে আরও এক সপ্তাহ লাগতে পারে। এ সময় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে তারা বলেন, ঝড়ো আবহাওয়া ও শিলাবৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে কৃষকরা মাঠে রয়েছেন। স্বপ্নের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলে এ ফসলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।

এ ব্যাপারে শাহাগোলা ইউনিয়নের তারাটিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান জানান, বিশেষ করে অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার আত্রাই উপজেলার কোথাও মাঝড়া পোকার আক্রমণ নেই এবং উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলনের জন্য আমরা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছি। বিশেষ করে বোরো ধান বপনের শুরু থেকেই আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায় কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এ সময় রাত ও দিনের তাপমাত্রা উঠানামা করছে। এটি অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল। কোনো কোনো সময় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করছে। এটি অব্যাহত থাকলে ধানের শীষ হিটশকে আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য কৃষকদের সবরকম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

(ঢাকা টাইমস/২৫এপ্রিল/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ওপারে কারফিউ, সুনামগঞ্জের ১২ কিলোমিটার সীমান্তে বিজিবির সতর্ক অবস্থান
খালিশপুরে শহীদ মিনারের জমি দখলের ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় শাহবাগে ছাত্র-জনতার উল্লাস
৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা