সাতক্ষীরা সুন্দরবনে বাড়তি সতর্কতা, সন্ধ্যায় আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল ক্রমেই উপকূলের দিক এগিয়ে আসছে। রবিবার সকাল থেকে সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জে হালকা বৃষ্টির সাথে দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানবে। এ অবস্থায় এখানে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সুন্দরবনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনসহ সকল টহলফাঁড়িতে অবস্থানরত বনকর্মীদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন ও সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের লোকালয়ে ফিরতে পরামর্শ দিয়ে তাদের উদ্ধারে বনকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বন বিভাগের এ কর্মকর্তা আরও জানান, শনিবার সকালের জোয়ারের পানি তার অফিসে যাওয়ার একমাত্র পায়ে চলা রাস্তার ওপরে উঠার উপক্রম হয়েছিল।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, আজ সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ফলে উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হবে। এছাড়া স্বাভাবিক থেকে ৮ হতে ১০ ফিট নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে উপকূলীয় এলাকার খেয়াঘাটগুলোতে মানুষের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। উপকূলীয় এলাকায় সকাল থেকে মাইকিং করে জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রবিবার সকালে উপকূলের নদ-নদীতে জোয়ার শুরু হয়েছে। শনিবার থেকে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় তিন থেকে চার ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদী এখন পর্যন্ত উত্তাল রূপ ধারণ করেনি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সকালে ঘোলা ত্রিমোহনী, ঝাপালি, নওয়াবেকী, পাখিমারা ও নীলডুমুর খেয়াঘাট এলাকায় মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিবুল আলম বলেন, উপজেলার ১৬৯ সাইক্লোন শেল্টারকে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছয় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীকে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় তৈরি থাকার জন্য বলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ নগদ অর্থ মজুদ রাখা হয়েছে। প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। উপকূলের মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারসহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
(ঢাকা টাইমস/২৬মে/এসএ)