সাতক্ষীরা উপকূলে রেমালের প্রভাব, বাঁধের ওপর আছড়ে পড়ছে ঢেউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা
| আপডেট : ২৬ মে ২০২৪, ১৭:২৯ | প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২৪, ১৭:১০

উপকূলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনিতে প্রবল বৃষ্টি ও দমকা বাতাস শুরু হয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন-চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় আকারের ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলের ভঙ্গুর বেড়িবাঁধে। ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত ঘোষণার পর থেকে উপকূলের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, কাশিমাড়ি ও আটুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব এলাকায় বেড়িবাঁধের বেশকিছু পয়েন্ট অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝড়ের পূর্বাভাস না পেলে ঘুম ভাঙে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তখন তারা তোড়জোড় শুরু করে।

গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি. এম মাসুদুল আলম বলেন, ঝড়ের নাম শুনলেই আমাদের এলাকার মানুষের প্রাণ কেঁপে ওঠে। প্রায় প্রতিবছরই জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে এখানকার মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়। তবে পাউবো যে বাঁধ নির্মাণ করে, তা কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায়।

তিনি জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ৮টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে আছে।

আটুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু বলেন, আটুলিয়া ইউনিয়নে ৬টি পয়েন্টে পাউবোর বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে বিড়ালক্ষ্মীতে তিনটি, বড়কুপটে একটি ও খোন্তাকাটার একটি জায়গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলে এসব জায়গায় বাঁধ টিকবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমানে ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী, নৈকাটিসহ বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে বড় ক্ষতি হতে পারে। বাঁধ ভাঙলে গোটা ইউনিয়ন নদীর পানিতে তলিয়ে যাবে।

বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনীর দুর্গাবাটিতে তিন জায়গায় ও দাতিনাখালীর দুই জায়গাসহ মোট ছয়টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় মোট ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫ কিলোমিটার, আর অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সবকটি বাঁধে কাজ চলমান রয়েছে, পর্যায়ক্রমে সবকটি পয়েন্টে কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলি জানান, আজ সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ফলে উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হবে। এছাড়া স্বাভাবিক থেকে ৮ হতে ১০ ফিট নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে।

(ঢাকা টাইমস/২৬মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :