বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে পুরুষের! নেপথ্যে কিছু বদঅভ্যাস, কী সেগুলো?

শেষ কয়েক দশকে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও সমানভাবে এই সমস্যার শিকার হচ্ছেন। তাই সন্তান না হলেই স্ত্রীদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার যে বদভ্যাস রয়েছে, তা ছাড়তে হবে।
কারণ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, নারী-পুরুষ উভয়ই সমানভাবে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, স্পার্মের মান খারাপ, শুক্রাণুর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকা এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশনসহ একাধিক কারণে পুরুষরা বন্ধ্যাত্বের খপ্পরে পড়তে পারেন। তাই প্রতিটি সমস্যার পেছনেই রয়েছে পুরুষের ছোট ছোট কিছু বদঅভ্যাস।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অজান্তেই কিছু বদঅভ্যাস বন্ধ্যাত্বের মতো গুরুতর সমস্যা ডেকে আনতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সকল ভুলের ফাঁদ এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে। এর মাধ্যমেই সমস্যার সহজ সমাধান করে ফেলতে পারবেন।
চলুন তবে দেখে আসি কোন কোন বদঅভ্যাসের কারণে পুরুষরা বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে পারেন-
ধূমপান ও মদ্যপানেই লুকিয়ে সমস্যার বীজ
ধূমপান ও মদ্যপান যে শরীরের একাধিক ক্ষতি করতে পারে, তা বিভিন্ন গবেষণায় ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি স্পার্মের মান খারাপ করতেও পারে এই দুই নেশা। তাই যত দ্রুত সম্ভব মদ্যপান ও ধূমপানের খপ্পর থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে।
এই কাজটুকু করতে পারলেই কিন্তু বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আর যদি নেশা ছাড়তে গিয়ে বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন, তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফেলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তিনিই আপনাকে নেশা মুক্তির সঠিক পথ দেখাতে পারবেন।
শর্করার মাত্রার দিকে নজর ফেরান
শেষ কয়েক দশকে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামীদিনে এই সংখ্যাটা যে আরও বাড়বে, তা নিয়ে ইতোমধ্য়ে ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে রেখেছে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ সংস্থা।
এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা উচিত যে, ডায়াবেটিস কিন্তু বন্ধ্যাত্বের কারণ। তাই যেনতেন প্রকারে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নইলে স্পার্মের মান খারাপ হওয়া এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশনের মতো একাধিক জটিলতা পিছু নিতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
দুশ্চিন্তাই ডেকে আনে বিপদ
দ্রুত এগিয়ে চলা জীবনে স্ট্রেস থাকবেই। তবে জেনে রাখুন, অত্যধিক দুশ্চিন্তা কিন্তু শরীরের ক্ষতি করে। এমনকি স্ট্রেস হরমোনের বাড়বাড়ন্তে ইরেকটাইল ডিসফাংশনও হয়। ফলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক।
তাই অত্যধিক স্ট্রেস থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিত প্রাণায়াম ও মাইন্ডফুলনেস অভ্যাস করুন। এই ধরনের ব্যায়ামের মাধ্যমেই মনকে অনায়াসে শান্ত করা যায়। এমনকি কমে স্ট্রেসও।
ঘুমের অভাবই বিপদের সিগন্যাল
দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই জরুরি। এর থেকে কম সময় ঘুমালে একাধিক সমস্যা পিছু নিতে পারে। এমনকি আঘাত হানতে পারে বন্ধ্যাত্বও।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ঘুমের ঘাটতি দেখা দিলে ইরেকটাইল ডিসফাংশনের মতো সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই পিছু নেয় বন্ধ্যাত্ব। তাই দিনে কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুম চাই-ই চাই। তবে রাতে শোয়ার পর কিছুতেই চোখের পাতা এক না করতে পারলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ফার্টিলিটি বজায় রাখতে চাইলে এই নিয়মগুলো মানতেই হবে
দুশ্চিন্তা কমাতে হবে। নেশার কারাগার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম মাস্ট। জাঙ্ক ফুড ছেড়ে ফল ও শাক-সবজি বেশি পরিমাণে খেতে হবে। দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। এছাড়া কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।
(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এজে)

মন্তব্য করুন