ইউএনওর নির্দেশে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে বেঁধে রাখার অভিযোগ

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২০ জুন ২০২৪, ২২:৪১| আপডেট : ২০ জুন ২০২৪, ২২:৪৮
অ- অ+
পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারী মো. ইকবাল হোসেনকে ইউএনওর নির্দেশে বেঁধে রাখার অভিযোগ। ছবি: ঢাকা টাইমস

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মো. ইকবাল হোসেন নামে পল্লী বিদ্যুতের একজন লাইন টেকনিশিয়ানকে রশি দিয়ে ব্যারাকের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মো. ইকবাল হোসেন এ অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় ইউএনওর আবাসিক কোয়ার্টার সংলগ্ন আনসার ব্যারাকে বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান ইকবাল। সেখানে তাকে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে মো. ইকবাল হোসেনের এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স। তিনি ঢাকা টাইমসকে জানান, বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন এবং বিষয়টি শুনেছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের কোয়াটারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের গত দুই বছরের পল্লী বিদ্যুতের বিল বকেয়া। বৃহস্পতিবার পল্লী বিদ্যুৎ দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের নির্দেশে লাইন টেকনিশিয়ান মো. ইকবাল হোসেন ও লাইন টু লেবেল-১ শাহজামাল ইয়াছিন নামে দুই কর্মচারী বকেয়া বিলের জন্য উপজেলা চত্বরে যান। সেখানে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও উপজেলা পরিষদের কোয়াটারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১, ও আনসার ব্যারাকের দায়িত্বশীল কাউকে পাননি তারা।বিষয়টি এজিএম মো. শেখ ফরিদকে ফোনে জানান পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীরা। পরে এজিএমের নির্দেশে আনসার ব্যারাকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা ব্যারাকে থাকা আনসার সদস্যদের জানালে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসানকে ফোনে বিষয়টি জানান। একপর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে আনসার সদস্যরা ইকবাল হোসেনকে ব্যারাকের বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন।

ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি ইচ্ছে করে সেখানে যাইনি। অফিসের নির্দেশে আমি শাহজামাল ইয়াছিনকে সঙ্গে নিয়ে আনসার ব্যারাকে গিয়েছি। সেখানে ব্যারাকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বললে আনসার সদস্যরা বাধা দেন এবং ইউএনও স্যারকে ফোন দেন। ইউএনও স্যার ফোনে কে পাঠিয়েছেন আমাদের কাছে জানতে চান। জবাবে আমরা ফোনে স্যারকে অফিস আদেশের বিষয়টি জানাই। একপর্যায়ে ইউএনও স্যার ব্যারাকের আনসারদের নির্দেশ দেন আমাদের বেঁধে রাখতে। পরে ইউএনও স্যারের নির্দেশে আনসার সদস্যরা আমাকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন।’

দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের এজিএম মো. শেখ ফরিদ বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের কোয়াটারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১, ও আনসার ব্যারাকের বিগত দুই বছরের পল্লী বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ মোতাবেক সেই বকেয়া বিলের জন্য লাইন টেকনিশিয়ান মো. ইকবাল হোসেন ও লাইন টু লেবেল-১ শাহজামাল ইয়াছিনকে পাঠিয়েছিলাম। আমি ধারণা করিনি এতেই এমন ঘটনা ঘটবে।

দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. ইয়াহিয়া সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। ওই কোয়াটারের দুই বছরের অধিক সময়ের বিদুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সে কারণেই লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটবে তা আশা করিনি।

এদিকে ঘটনার পরপরই আনসার ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ক্যাম্প কমান্ডার মো. খাইরুল ইসলাম দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ডায়েরিতে পল্লী বিদ্যুতের দুই কর্মচারী কর্তৃক আনসার সদস্যদেরকে মারধর করার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি ছুটিতে আছি। তবে আনসার সদস্য ও পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মচারীর সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। পরে আমি পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করছি।

আনসার সদস্যরা কাউকে বেঁধে রাখতে পারেন কিনা জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, তাদের কর্তব্যকাজে বাধা দিলে বা শারীরিকভাবে আক্রান্ত হলে তারা যেকোনো ব্যক্তিকে আটক করতেই পারে। তবে এমন কিছু হয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখার বিষয় আছে।

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/পিএস/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন: লায়ন ফারুক
মানুষ চায় জনগণের সরকার: আমিনুল হক
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: সাম্প্রতিক জারিকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন
বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা