কোটিপতি হয়ে আপন ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখেননি আবেদ আলী

ফেরি করে চানাচুর বিক্রেতা ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেসের খরচ চালাতেন সৈয়দ আবেদ আলী। পিএসসিতে চাকরির পর রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া আবেদ আলী আর সম্পর্ক রাখেননি সেই আপন ভাইয়ের সঙ্গে।
পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী কয়েক বছর ধরে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামে এসে আলিশান বাড়ি করলেও খোঁজ নেননি ভাইয়ের। পাশেই দোচালা টিনের ঘরে সপরিবারে বসবাস ছোট ভাই সাবেদ আলীর।
সরেজমিনে গিয়ে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে সৈয়দ আবেদ আলী সম্পর্কে। এলাকায় আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম নানাভাবে নিজেদের সমাজে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও সেই ছোট ভাইটি এখন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবেদ আলীর সৈয়দ পদবি তার নিজের দেওয়া। তাদের পারিবারিক পদবি মীর। বিত্ত-বৈভব ফুলে-ফেঁপে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আবেদ আলী মীর পদবি পাল্টে নামের আগে সৈয়দ পদবি ব্যবহার শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দোচালা টিনের ঘরে বসবাস সাবেদ আলীর। অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। দুমুঠো ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়। আগে ঢাকায় চানাচুর বিক্রি করতেন।
সাবেদ আলী বলেন, ‘১৯৯৭ সালের দিকে আমি মেরাদিয়াতে চানাচুর বিক্রি করতাম। আবেদ আলী থাকত ইন্দিরা রোডে। সে বেকার ছিল। মাঝেমধ্যে আমার কাছ থেকে মেসের খরচের জন্য ৩০০-৫০০ টাকা নিত।’
তবে শাহিন নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে পিএসসিতে চাকরি হওয়ার পর আবেদ আলী বদলে যান। ওই বছরই বিয়ে করেন। সাবেদ আলী বলেন, ‘বিয়ের পরে সে আমাদের পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। এখনো তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
তাতে আফসোস নেই সাবেদ আলীর। বড় ভাই আবেদ আলীর কোটিপতি হওয়া নিয়েও কোনো দিন মাথা ঘামাননি তিনি। তার কাছ থেকে প্রতিবেশীরা কম-বেশি সহযোগিতা পেলেও আপন ভাইয়ের কোনো খোঁজ নেননি।
সাবেদ আলী জানান, ‘ঈদ বা কোরবানিতে উপহার দিলেও গ্রহণ করেন না সাবেদ আলী। আপন ভাই ও ভাতিজা গ্রেপ্তার হওয়াতে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই তার। বরং বিষয়টি তদন্ত করে পরিষ্কার হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বাবার উত্থান নিয়ে ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম সস্প্রতি একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। বাবার উত্থানের গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একদম ছোট থেকে বড় হয়েছেন। আমার বাবার বয়স যখন ৮ বছর, তখন পেটের দায়ে তিনি ঢাকায় চলে গেছেন। ঢাকায় গিয়ে কুলিগিরি করে ৫০ টাকা রুজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এখন তিনি একটি লিমিটেড কোম্পানির মালিক। তিনি কষ্ট করে বড় হয়েছেন।’
পিএসসি প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মামলায় সৈয়দ আবেদ আলী, তার ছেলে সিয়াম, প্রতিষ্ঠানটির তিন উপপরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়সহ ১৪ জন পলাতক রয়েছে। এই মামলায় আরও ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/মোআ)

মন্তব্য করুন