‘যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’
৭০’র বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে মোহাম্মদপুরে মাদক-সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ র্যালি

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় কিশোর গ্যাং, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন অন্তত ৭০টিরও বেশি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে একযোগে মানববন্ধন ও র্যালির আয়োজন করা হয়।
‘সুশিক্ষা ও সহশিক্ষার মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং মুক্ত ন্যায়নীতি ও আদর্শ মোহাম্মদপুর-আদাবর গড়ার প্রত্যয়ে’ এই কর্মসূচির আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন আলফা স্টার ফাউন্ডেশন।
‘মাদক নয়, স্বপ্ন চাই’, ‘যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’, ‘গ্যাং নয়, গড়বো ন্যায়নির্ভর সমাজ’—এমন নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মোহাম্মদপুর-আদাবরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
শত শত শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে তাদের অবস্থান জানান দেন মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
মানববন্ধন শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে শুরু হয়ে নুরজাহান রোড, টাউনহল হয়ে তাজমহল রোডে গিয়ে শেষ হয়।
‘মোহাম্মদপুর-আদাবর সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় দৈনিক যুগান্তর-এর সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল হাই শিকদার বলেন, ‘মোহাম্মদপুর সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা রয়েছে—মাদক, সন্ত্রাস, গ্যাং কালচারের জায়গা। অথচ এখানে রয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আজকের এই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্যই প্রমাণ করে, মোহাম্মদপুর বদলাচ্ছে। এ শিক্ষার্থীরাই একদিন সমাজের পরিবর্তন ঘটাবে। যদি আমরা সত্যিই দেশকে ভালোবাসি, তবে মাদক, সন্ত্রাস ও অন্যায়কে না বলতে হবে।’
বিএনপি নেতা আবদুস সালাম বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়। মোহাম্মদপুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আজ মাদক, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ আন্দোলন যেন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।’
কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ওয়ালী উল্লাহ বলেন, ‘মোহাম্মদপুর-আদাবরের শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ, আমরা এখানকার সব অন্যায় দূর করবো।’
আয়োজক সংগঠন আলফা স্টার ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘যখন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও রাজনীতিবিদরা একসাথে কাজ করে—তখন সমাজ পরিবর্তন হবেই।’
স্থানীয়ভাবে এমন উদ্যোগকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে। সবার আশা, এ ধরনের সচেতনতা ও সামাজিক প্রতিরোধই মোহাম্মদপুর-আদাবরকে আবার শিক্ষার মর্যাদায় ফিরিয়ে আনবে।

মন্তব্য করুন