দিঘির শহরে পরিণত হচ্ছে কুয়াকাটা

আব্দুল কাইয়ুম, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৮:০৪
অ- অ+

অবকাঠামোগত উন্নয়ন, হাউজিং কোম্পানিসহ পর্যটনমুখী বিনিয়োগকারীদের কেনা নিচু জমি ভরাট করতে গিয়ে কৃষি সমতল জমি হারাচ্ছে কুয়াকাটা। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে ভেঙে পড়ছে পার্শ্ববর্তী কৃষি সমতল জমির মাটি। দিঘির শহরে পরিণত হচ্ছে কুয়াকাটা।

জানা যায, বিনিয়োগকারীদের নিচু জমি উঁচু করা, পৌর এলাকার সড়ক আবাসিক হোটেল-মোটেল নির্মাণে বালুর ব্যবহার বেড়েছে কয়েক গুণ। এসব বালুর চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে পৌর এলাকার সমতল কৃষি জমির ওপর কোপ পড়ছে ড্রেজার মেশিনের। নগদ টাকার লোভে বালু তুলে বিক্রি করছেন কোনো কোনো জমির মালিক।

ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও কুয়াকাটা পৌর এলাকার চিত্র ভিন্ন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালু উত্তোলনের কারণে কুয়াকাটা পৌর এলাকায় ৫০টির বেশি বড় বড় পুকুর এবং দিঘি তৈরি হয়েছে। এটি পর্যটন বিনির্মাণে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। জমি বিক্রির চেয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় লাভবান হচ্ছে জমির মালিকরা। কারণে কৃষি সমতল থেকে বালু বিক্রির হিড়িক পড়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে পাশের কৃষি সমতল জমির মাটি ভেঙে পড়ছে। কৃষি সমতল জমি হারিয়ে কুয়াকাটা পৌর এলাকা পরিণত হচ্ছে দিঘির শহরে। জমির ভারসাম্য হারিয়ে পরিবেশের ওপর এর প্রভাব পড়ছে বলে জানান পর্যটন প্রেমীরা। কুয়াকাটা পৌরসভার নম্বর ওয়ার্ডের হোসেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটার মুসুল্লীয়াবাদ থেকে মহিবুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি বিরোধীয় জমি থেকে গত বছর ধরে বালু তুলে বিক্রি করছে। এতে সেখানে বিশালাকার দিঘি তৈরি হয়েছে।

জাহাঙ্গীর হাওলাদার আরও বলেন, বর্তমানে মহিবুল্লাহ দুটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে কুয়াকাটা বেড়িবাঁধ সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করছেন। এতে তাদের পার্শ্ববর্তী জমি ভেঙে পড়ছে। কৃষিজমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কমে যাচ্ছে সমতল ভূমি। এতে তারা বাধা দিলে মহিবুল্লাহ তাদের মামলাসহ প্রশাসনিক ভয়ভীতি দেখান। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা পার্শ্ববর্তী জমির মালিক নুরুল হক বলেন, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা প্রভাবশালীদের নাম ভাঙিয়ে কৃষিজমি থেকে বালু তোলা হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

সড়কের পাশ ঘেঁষে বালু তুলে দিঘি তৈরি করায় সড়ক ভেঙে পড়ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা জালাল আহম্মেদ। তিনি অভিযোগ করেন, এর প্রতিবাদ করলে মহিবুল্লাহ তাকে জানান এর সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন জড়িত রয়েছে। এলজিইডির সড়ক নির্মাণকাজে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। বাধা দিতে গেলে তাকে মুহিবুল্লা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিষয় মহিবুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় ভূমি প্রশাসন বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানে। তাদের সম্মতিতে বালু তোলা হচ্ছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বালু উত্তোলনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বালু খেকো একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তার দাবি, উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৌশিক আহম্মেদকে পাঠিয়ে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত মহিবুল্লাহ পালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। শিগগির আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুনে ডিএমপির শ্রেষ্ঠ বিভাগ: ক্রাইমে উত্তরা, গোয়েন্দা লালবাগ
জনতা ব্যাংকে বিকাশের মাধ্যমে রেমিটেন্স পরিশোধের কার্যক্রম উদ্বোধন
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অপরাধীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
খানসামায় পাটক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা