হল ছাড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষের জেরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মেনে হল ছাড়া শুরু করেছেন রাবির শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকালে সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা বেডিংপত্র নিয়ে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। তবে তাদের মধ্যে আতঙ্কও আছে। কারণ, মঙ্গলবার ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে সারা দেশে মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় তারা জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। অভিভাবকরা বারবার ফোন করে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা। সব মিলিয়ে তারা হল ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন- ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়।
এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এক জরুরি সভা ডেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশও দেয়। সেই মতো শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে ছুটছেন বাড়ির পথে।
বুধবার ভোর থেকে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছাড়া শুরু করেছেন। এছাড়া মঙ্গলবার আন্দোলন শেষে অধিকাংশ শিক্ষার্থী হল ছেড়ে নিকটআত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবের মেসে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাবি শিক্ষার্থী রেজওয়ান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের অবস্থা ভালো না। বাড়ি থেকে বাবা-মা বারবার ফোন দিচ্ছে। তাই ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। পরিস্থিতি ভালো হলে তারপর হলে আসবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের রামীম বলেন, ‘গতকাল রাতে মেসে ছিলাম। সকালে হলে এসে আমার জিনিসপত্র নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছি। আতঙ্কে দিন কাটানোর চেয়ে বাসায় চলে যাই। বাড়ি থেকেও পরিবার কল দিচ্ছে। সবকিছু স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে আসবো।’
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে পরিচয়পত্র যাচাইসহ পুলিশকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এজে)

মন্তব্য করুন