নিহত আবু সাঈদের ছবি পোস্ট করে আন্দোলন নিয়ে যা লিখলেন নির্মাতা ফারুকী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০২৪, ১৭:৪২
অ- অ+

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের জেরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের টানা দুই দিনের সংঘর্ষে প্রাণ গেছে ছয়জনের। আহত হয়েছেন শয়ে শয়ে। আজও সারা দেশের অবস্থা থমথমে, আতঙ্কে শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে সাধারণ জনতা।

দেশের এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার পুলিশের ছররা গুলিতে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে মতামত প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বুধবার দুপুরে পোস্টটি দেন তিনি?

ফারুকী লিখেছেন, ‘আপনারা যারা ভাবছেন আন্দোলনটা স্রেফ একটা চাকরির জন্য, তারা বোকার স্বর্গে আছেন। আপনারা এর সবগুলা শ্লোগান খেয়াল করেন। দেখবেন, এই আন্দোলন নাগরিকের সমমর্যাদার জন্য। এই আন্দোলন নিজের দেশে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে না বাঁচার জন্য। এই আন্দোলন রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন, তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে, দেশের মালিক তারা না, আসল মালিক জনগণ। সেই জনগণকে রাষ্ট্র যে পাত্তা দেয় না, এই আন্দোলন সেটার বিরুদ্ধেও একটা বার্তা। রাষ্ট্র জনগণকে কেন পাত্তা দেয় না, এই আন্দোলনকারীরা সেটাও বোঝে। যে কারণে ভোটের বিষয়টাও স্লোগান আকারে শুনেছি। আমি এটাকে এইভাবেই পাঠ করছি।’

নির্মাতা আরও লিখেছেন, ‘পাবলিক সারভেন্ট শব্দটা বেশ ভালো। নির্বাচিত (!) প্রতিনিধি বা যেকোনো সরকারি বেতনভুক্ত ব্যক্তিকে এই শব্দেই ডাকা উচিত সবসময়। এই আন্দোলন সেই পাবলিক সারভেন্টদের মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, আপনি আমার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। অল পাওয়ার টু দ্য পিপল। অল পাওয়ার টু দ্য ইয়ুথ। প্রেয়ারস ফর মাই ফেলো সিটিজেনস। শহীদের রক্ত কখনো বিফলে যায় না।’

এর আগে সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন ফারুকী। কিন্তু কিছু সময় পরই সেটি ডেলিট করে দেন।

সেই ঘটনা উল্লেখ করে ফারুকী লিখেছেন, ‘এই যে এত লম্বা লেখাটা লিখলাম, এটা আসলে আমি লিখিনি। আমি মুখে বলেছি, একজন ট্রান্সক্রাইব করে দিয়েছে। যারা আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানেন, তারা জানেন যে আমি শারীরিকভাবে এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। ফলে আমার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সীমিত। কোটা আন্দোলন নিয়ে আমি কিছুদিন আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে সরিয়ে ফেলেছি। কারণ, একটা স্ট্যাটাস দিলে আমার মাথার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরবর্তীতে আরেকটা কথা লিখতে ইচ্ছা হয় এবং লিখতে থাকলে যত বেশি এংগেজড হই, সেটা আমার শারীরিক অবস্থার জন্য ভালো না। আমার শরীর সুস্থ করার জন্য যে লড়াইটা, সেটা এক দীর্ঘ লড়াই। সেই লড়াইটা করার অনুমতি নিশ্চয়ই পেতে পারি?’

আক্ষেপ করে নির্মাতা লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমার স্ট্যাটাসটা সরিয়ে ফেলার পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন অনলাইন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লিখেছেন যে, আমি দালাল হয়ে গেছি, এই কারণে চুপ হয়ে আছি। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ হচ্ছে, আপনাকে প্রতিদিন প্রমাণ করতে হবে আপনি কে! আজ রাষ্ট্র যে অবস্থায় এসেছে, এ অবস্থায় আসার শুরু যখন হয়েছিল, তখন থেকে তারা যদি আমার ফেসবুকের লেখাগুলো একটু গবেষণা করে দেখতো, তাহলে বুঝতে পারত আমি কে, আমি কী বলেছি এবং কী বলার কারণে আমি বারবার বিপদে পড়ি। কোনো রিসার্চ নাই, জাস্ট ঢালাওভাবে দালাল বলে দাও। আজ যে বাইনারি চলছে, হয় তুমি আমার পক্ষে, না হয় তুমি আমার বিপক্ষে। এই বাইনারির বিপক্ষে আমি ২০১৪ সালে একটা লেখা লিখেছিলাম “কিন্তু এবং যদির খোঁজে”, বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছাপা হয়েছিল।’

‘মনে রাখতে হবে, ওই সময় ছিল শাহবাগের সময়। ২০১৩ তে যখন শাহবাগে আন্দোলন শুরু হলো তখন, বাইনারি এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যে, বলতে শুরু হল “কিন্তু এবং যদি” যে বলবে, সেই রাজাকার, সেই ছাগু। সেই ছাগু ট্যাগটাকে আমি গলার মালা হিসেবে নিয়ে লিখেছিলাম “কিন্তু এবং যদির খোঁজে”। কিছুদিন আগেও আমি বলেছি, স্বাধীনতাকে প্রশ্ন করতে পারাটাই স্বাধীনতা!’

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকা-১৪: এস এ খালেকের উত্তরাধিকার সাজুকেই বিএনপির নির্ভরযোগ্য প্রার্থী ভাবছেন স্থানীয়রা
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডাকাতি হওয়া বিপুল পরিমাণ সৌদি রিয়ালসহ ৭ জন গ্রেপ্তার
ডেঙ্গুতে আরও ১জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৫৮
জুনে ১৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করেছে ১২ এপিবিএন, মালিকদের কাছে হস্তান্তর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা