নাইকো মামলার সব সাক্ষীকে হাজিরের নির্দেশ, জেনে নিন সাক্ষী কারা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সতের বছর আগে দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষের সব সাক্ষীকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজির করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাইকো মামলায় মোট ৭০ জন সাক্ষী। তাদের মধ্যে কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা কেবিন দুগ্গান ও লয়েড শোয়েপসহ পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে এবং একজনের চলমান।
এছাড়া মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সম্পূর্ণ সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল বাকী আংশিক সাক্ষ্য দিয়েছেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান রবিবার এক আদেশে তদন্ত কর্মকর্তাসহ এই সাক্ষীদের ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজির করতে নির্দেশ দেন। ওইদিন সাক্ষীরা হাজির না হলে আদালত খালেদা জিয়াসহ সকল আসামিকে খালাস দিতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মো. জাকির হোসেন ভূঁইয়া মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দি বন্ধের আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর ফাতেমা খানম মিলা এদিন কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় সময় আবেদন করেন।
আইনজীবী জাকির আদালতকে বলেন, গত তিনটি শুনানিতে প্রসিকিউশন কোনো সাক্ষীকে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে তারা আসামিদের হয়রানি করছেন। তাই সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড বন্ধ করে আসামিদের খালাস দেওয়া হোক।
মামলা বৃত্তান্ত:
কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেছিল দুদক।
মামলাটি তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। একই বছরের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন।
২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। আর ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। এরপর খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আলোচিত মামলাটির বিচার শুরু হয়।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হচ্ছেন— সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এদের মধ্যে তিন জন পলাতক।
আর অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এবং বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৮সেপ্টেম্বর/ডিএম)