ভারত সফরে টাইগারদের চ্যালেঞ্জ ‘এসজি বল’, কী এর বিশেষত্ব?
পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করে দেশে ফিরেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কেননা পাকিস্তানের পর এবার তাদের সামনে ভারত পরীক্ষা। পূর্ণ শক্তির ভারতকে তাদের মাটিতে হারাতে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে টাইগারদের। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য উইকেট কিংবা কন্ডিশনের চেয়ে বড় চিন্তার কারণ হতে পারে বল।
বাংলাদেশের জন্য ভারত সিরিজে অপেক্ষা করছে অপেক্ষাকৃত অপরিচিত ‘এসজি বল।’ সাধারণত কোকাবুরা খেলে অভ্যস্ত বাংলাদেশ। নিজেদের হোম সিরিজে এই বলই ব্যবহার করে টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও পেয়েছিল কোকাবুরা বল। রাওয়ালপিন্ডির পিচে নিজেদের খেলাটা তাই উপভোগই করেছে বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনেও লিটন কুমার দাস কথা বললেন এসজি বল প্রসঙ্গে, ‘আপনারা জানেন ভারত বড় একটা দল, আর এই বলে আমরা খুব কমই খেলি। আমাদের প্লেয়াররা খুবই পরিশ্রম করছে দেখা যাক কি হয়। প্রস্তুতি বলতে আমাদের সেরা বোলারদের বলই আমরা খেলছি। কিছুটা কঠিন তো আছেই। আপনি যদি দেখেন কোকাবুরার নতুন বল খেলা কঠিন, তবে পুরাতন বল খেলা সহজ। আর এসজি বলে নতুন বল খেলা সহজ বলেও পুরাতন বল কিন্তু খেলা কঠিন।’
সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তান সফরে খেলা হয়েছিল চিরায়ত কোকাবুরা বলে। যে বলটি দিয়েই সারাবছর বিভিন্ন জায়গায় টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এই বলটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। অন্যদিকে, ভারতের মাটিতে খেলা হবে ‘এসজি বলে’। খুব বেশি খেলার সুযোগ না পাওয়ায় এই বলটিই এখন লিটনদের দুশ্চিন্তার কারণ।
কোকাবুরার চেয়ে এই বল কিছুটা ভিন্ন। এসজি বলে খাড়া সিম দেখা যায়, কিছুটা ভারীও বটে। এখানে বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখাটাও একটু কঠিন। যে কারণে ফিল্ডারদের বলটাতে বাড়তি যত্ন করতে হয়। এসজির আরেক বড় বিশেষত্ব এর সুইং। বলটি ইনিংসের একেবারে শুরুতে সুইং না করলেও ৫-৬ ওভার পর সুইং শুরু হয়।
সাধারণত কোকাবুরা বলগুলো উজ্জ্বল বর্ণের হয়ে থাকে। এর ফলে ম্যাচের শুরু থেকে বাড়তি সুইং পায় পেসাররা। আবার বলটি পুরোনো হয়ে গেলে বেশি সুবিধা পায় ব্যাটাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর লিটন-মিরাজের স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারার এও এক বড় কারণ।
অন্যদিকে, এসজি বল খানিকটা কালচে বর্ণের হওয়ায় পেসারদের সুইং পেতে বেশ অপেক্ষা করতে হয়। আর এই পার্থক্য বোলার-ব্যাটারদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে। মিরপুরের অনুশীলন পর্বে তাই এসজি বল নিয়েই ঘাম ঝরাচ্ছেন বাংলাদেশের বোলাররা।
কোকাবুরা, এসজি কিংবা ডিউক- তিন ধরনের বলে মূল পার্থক্যের জায়গা সিমের সেলাই ও ব্যবহৃত হওয়া চামড়ায়। কোকাবুরার তুলনায় খানিকটা মোটা চামড়া ব্যবহার করা হয় এসজি বলে। দুটি বলের সেলাইয়েও আছে পার্থক্য। কোকাবুরা বল মেশিন ও হাত- দুভাবেই সেলাই করা হয়, অন্যদিকে এসজি বলের সেলাই পুরোটা হয় হাতে। মূলত এ কারণে সিমে বড় পার্থক্য তৈরি হয়। কোকাবুরার চেয়ে এসজি বলের সিমে অমসৃণতা বেশি। এই অমসৃণতার সুযোগটা বেশ ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে স্পিনাররা।
এর আগে বিসিবি মিডিয়াতে দলের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শরিফুল ইসলামের কণ্ঠেও উঠে আসে এসজি বলের কথা, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে, আরও ভালো মতো নেব। বল যেহেতু একটা ফ্যাক্ট। আমরা খেলছি কোকাবুরাতে, এখন খেলব এসজিতে- এটার সঙ্গে আমরা যত মানিয়ে নিতে পারব, ততই আমাদের জন্য ভালো।’
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এনবিডব্লিউ)