‘টাকা না দিলে মামলা’, ওয়ার্ড বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ একাধিক ব্যবসায়ীর
বড় অংকের চাঁদা দিতে হবে। নইলে মামলায় ফাঁসানোর ভয়। এমন অভিযোগ রাজধানীর কাঁঠালবাগান ও পান্থপথ এলাকার তিন ব্যবসায়ীর। অভিযোগ স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে তার নামে লিখিত অভিযোগ গেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে। তবে অস্বীকার করছেন তিনি। বলছেন, তাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বিএনপির দপ্তরে জমা পড়া অভিযোগ আর প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মান্নান। তিনি গত ৭ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেন মনু নামে কাঁঠালবাগান কালভার্ট রোডের স্থায়ী এক বাসিন্দার কাছে মোবাইলে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।
অভিযোগকারী আনোয়ার হোসেন মনু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘‘আব্দুল মান্নান আমাকে মোবাইল ফোনে কল করে ৫০ লাখ টাকা দিতে বলেন। তিনি (মান্নান) দাবি করেন, ‘অনেক মামলা খাইছি, অনেক টাকা খরচ হইছে, এলাকায় থাকতে হলে টাকা দিতে হবে।’’
পরে মান্নানের সহযোগী আকতারের মোবাইল ফোন থেকে আবারো ফোন করে তার কাছে টাকা চাওয়া হয় বলে দাবি করেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। বলেন, এরপর একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে মান্নান আমার কাছে আবারও টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা দেবেন বলে হুমকি দেন মান্নান।’
আনোয়ার হোসেন মনুর মতোই মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন পান্থপথ ফার্নিচার মার্কেটের মেহেজাবীন সুজের মালিক মো. সজিব। ঢাকা টাইমসের কাছে তিনি দাবি করেন, ‘আব্দুল মান্নান আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছেন। তার মতো টাকা না দিলে আমার নামে মামলার হুমকি দেন।’
কোনো রাজনীতিতে জড়িত নন দাবি করে সজিব বলেন, ‘আমরা সরকারকে সবসময় ভ্যাট-ট্যাক্স দেই। আওয়ামী লীগও করি না। তবে কেন টাকা দাবি করা হচ্ছে? মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে?’
লিয়াকত কবির পান্থপথের পান্থপিক ফরেন ফার্নিচার নামে একটি দোকানের মালিক। তার অভিযোগ, ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আব্দুল মান্নান সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছেন।
আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজি এবং হত্যার হুমকির’ একটি লিখিত অভিযোগ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন লিয়াকত কবির। অভিযোগটি ঢাকা টাইমসের হাতে এসেছে।
অভিযোগে লিয়াকত কবির বলেন, তার মালিকানাধীন ফার্নিচারের দোকানটি গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা হান্নান ও ইন্নার দখলে ছিল। গত ৫ আগস্ট স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সহায়তায় তিনি সেটি উদ্ধার করেন। এসময় আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া তার সহযোগীদের নিয়ে লিয়াকত কবিরকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আব্দুল মান্নান ঢাকা টাইমসকে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন। তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। আমি যেহেতু দলীয় পদধারী, তাই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও আর ষড়যন্ত্র করছে।’
এদিকে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন মাইনুর বিরুদ্ধেও গ্রীনরোডের বারেক ম্যানশনের একটি দোকান দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই দোকানে মাইনুর তালা লাগানোর একটি ভিডিও পেয়েছে ঢাকা টাইমস।
তবে এ বিষয়ে জানতে মাইনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বারেক নামে এজাহারভুক্ত এক আসামি ও তার দুই ছেলেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরতে আসে। ওইসময় জনরোষ থেকে আসামিদের বাঁচিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিই। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে এর সত্যতা জানা যাবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/জেবি)