রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ মাদক-অস্ত্র জব্দ, আটক দুই

রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, মাদকদ্রব্য ও দুটি অস্ত্র জব্দ করেছে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সেনাসদস্যরা। এসময় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে অভিযান পরিচালনাকালে বনানী ১১ নম্বরে সেলসিয়াস সিসা বারের সামনে থেকে অস্ত্রসহ আটক করা হয় নাফিস মো. আলম ডন নামে একজনকে। পরে তার খিলক্ষেতের লেকসিটি কনকর্ড ছায়ানীড় ভবনের ফ্ল্যাট থেকে মো. সুজন নামে আরও এক সহযোগীকে আটক করা হয়। এসময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, বিয়ার, সিসা সেবনের স্ট্যান্ড, ফয়েল পেপার, বিভিন্ন মদের ডিলারদের তথ্য সংবলিত ডায়েরি, ওয়াকিটকি সেট, সিগন্যাল লাইট, সিসি ক্যামেরা, ল্যাপটপ, ইলেকট্রিক ডিভাইস, টাকা জব্দ করে দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্প ও খিলক্ষেত থানা পুলিশের যৌথবাহিনী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাফিস মো. আলমের বাংলাদেশ ও কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। কানাডার পাসপোর্ট দেখিয়ে তিনি নিজেকে বাংলাদেশে ফরেইনার হিসেবে পরিচয় দেন এবং বিদেশি মদের ব্যবসার সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন। বনানী ১১ এর সেলসিয়াস সিসা বার, একই রোডের বনানী ফার্মাসিসহ বেশ কিছু নামিদামি বার ও ক্লাবে মদ সরবরাহ করেন তিনি। তার নিজস্ব মদ সরবরাহের কোম্পানি রয়েছে, যার নাম সিন্ডিকেট ইন্টারন্যাশনাল।
জানা যায়, বসুন্ধরা, বারিধারা, গুলশান, বনানী, উত্তরা এলাকাসহ ঢাকার বেশ কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও তিনি এই মদের জোগান দেন। তিনি নিজেকে ডন বলে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করেন। তার ফেসবুকের প্রোফাইল ঘাটলে জনসমুক্ষে অস্ত্র, মদ, নারী ইত্যাদি নিয়ে উন্মাদনা করতে দেখা যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে তার শটগান দিয়ে গুলির ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে তিনি সেই ভিডিও দিয়ে নিজের আধিপত্য আরও বেশি জাহির করার চেষ্টা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থানা থেকে লুট হওয়া পুলিশের পিস্তলগুলোর মধ্যে একটি নাফিসের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে কোন থানা থেকে এটি লুট করা হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। নাফিসের এই সাম্রাজ্যে জড়িত রয়েছেন তার স্ত্রীসহ অনেকেই।
দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্পের মেজর খন্দকার জাহিদুল হক বলেন, “নাফিসকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম। তাকে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারিদের প্রতি আমরা একটি শক্ত বার্তা দিতে পেরেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
নাফিসের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলাসহ আগের প্রায় সাতটি মামলা রয়েছে। আজ অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও মাদকদ্রব্য সেবন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৮অক্টোবর/টিএ/এফএ)

মন্তব্য করুন