কুড়িগ্রাম পৌরসভার সড়ক যেন মরণফাঁদ
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কুড়িগ্রাম পৌরসভার ভেতর দিয়ে যাওয়া কুড়িগ্রাম-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলছে। জেলায় গত কয়েক দিন ধরে ভারী বর্ষণে সড়কগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার সবুজ পাড়া, পুরাতন পশু হাসপাতাল মোড়, জিয়া বাজার, দাদা মোড়, পৌরসভার সামনেসহ কুড়িগ্রাম থেকে সোনাহাট স্থলবন্দর যাওয়ার পথে প্রায় কয়েক কিলোমিটার রাস্তাটি খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে তিনটি উপজেলার ৪টি থানার যাত্রীবাহী হালকা ও ভারী যানবাহন এবং স্থলবন্দরের পাথরবোঝাই ট্রাক প্রতিনিয়ত চলাচল করে। প্রায় সময় ছোটখাট দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এই পথে চলাচলকারীরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনের শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে দুটি সড়ক দুই দিকে চলে গেছে। সড়ক ও জনপদের অধীনের প্রায় তিন কিলোমিটার ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার অধীনে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক দিয়ে জেলার নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী যানবাহন সোনাহাট স্থলবন্দর রংপুর-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ পথে চলাচল করতে হয়।
এসব সড়ক থেকে পাথর ও বিটুমিন উঠে গিয়ে মাঝারি আকারের একাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত কষ্ট করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। বেশির ভাগ সময় সড়কে যানবাহন আটকে ট্রাফিক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এই দুই সড়কের পাশে সাতটি পূজামণ্ডপ রয়েছে। শহরের প্রতিটি পূজামণ্ডপ থেকে প্রতিমা নিয়ে এ পথ দিয়ে বিসর্জন দিতে নেওয়া হয়। সড়কের এই হাল পূজামণ্ডপের লোকজকে চিন্তায় ফেলেছে।
গাড়িচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সড়কের পিচ উঠে গিয়ে স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আমার গাড়ি দুবার পড়ে গেছে এখানে। আমি সময়মতো মাল ডেলিভারি দিতে পারি না।’
এক মাস ধরে রাস্তার এই অবস্থা বলে জানান রিক্সাচালক দুলু মিয়া। রাস্তার হাল অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কট্টি পানি, কট্টি খাল বোঝা যায় না। জীবন ধরি চলা নাগে, খাল হয়া গেইছে।’
গাড়িচালক ফজলু মিয়া বলেন, ‘রাস্তাগুলো এমনিতেই চিকন। সাথে রাস্তায় গর্ত দিয়ে ভরে গেছে। এজন্য যানজট বেড়েছে। যাত্রী, চালক সবার দুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী নুর ইসলামের দোকানের সামনে পানি। ফাঁকে ফাঁকে কিছু ইট বিছানো। এগুলো তিনি বাসা থেকে এনে বিছিয়েছেন। তিনি বলেন, ’আমার দোকানের সামনে খাল হয়া গেইছে। বাধ্য হয়ে বাসা থেকে ইট আনি দিছি, দুই দিন পরে ইট ভাঙি সেই খাল হইছে।’ দ্রুত রাস্তা ঠিক করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ’এখন বৃষ্টির মওসুম। এমন অবস্থায় টেকসই কাজ করা মুশকিল। জনগণের কষ্ট লাঘবে আমাদের অংশটুকু আপাতত ইট বালু ফেলে গর্তগুলো পূরণ করা হবে।’
কুড়িগ্রাম পৌরসভার প্রশাসক উত্তম কুমার রায় বলেন, ’পুজোর আগেই পৌরসভার রাস্তাগুলো সংস্কার করা হবে। এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।‘
(ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/মোআ)