উপদেষ্টা আসিফের যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনের পর দুই পক্ষের হাতাহাতি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শন করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরিদর্শন শেষে মন্দির প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পরপর মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় সনাতন ধর্মালম্বী সংগঠনের নেতাদের হাতাহাতি হয়েছে। তারা দেবির মুকুট চুরির ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।

শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা একটার দিকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শনে আসেন উপদেষ্টা।

দুদিন আগে এই মন্দির থেকে চুরি যায় যশোরেশ্বরীর মাথার স্বর্ণের মুকুট। এটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসে উপহার দেন এবং সেটি দেবিমূর্তির মাথায় পরিয়ে দেন।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘মন্দিরে চুরির ঘটনা দুঃখজনক। আমরা খবর শোনা মাত্রই ঢাকা থেকে প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি চুরি হওয়া মুকুট যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়।’ তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে আবারও নির্দেশ দেন যশোরেশ্বরী মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে মুকুট উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব দাশ, জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, মন্দির কমিটির নেতারা।

মন্দির পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা মুন্সীগঞ্জে অবস্থিত আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম হয়ে সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ভ্রমণে যান।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে মন্দির ত্যাগ করার পর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

হাতাহাতির বিষয়ে মহারাজা প্রতাপাদিত্য স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস বলেন, ‘নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতার কারণে মুকুট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় ও তার লোকজন আমাদের ওপর চড়াও হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দাবি করেন হাতাহাতির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তবে ভিডিও ফুটেছে দেখা গেছে বিশৃঙ্খলা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বহিরাগতরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।

এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মহোদয় মন্দির পরিদর্শন করে বেরিয়ে যাওয়ার পর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের মধ্যে একটু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/মোআ