ডা. ইকবাল, সাদ মুসা গ্রুপের মোহসিন, এনবিআরের আরজিনার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. এইচবিএম ইকবাল ও সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক পরিচালক মুহাম্মাদ মোহসিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪৯ এর সাবেক এমপি সেলিনা ইসলাম এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (মূসক মনিটরিং, পরিসংখ্যান ও সমন্বয়) বিভাগের দ্বিতীয় সচিব আরজিনা খাতুনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি ডা. মো. মনসুর রহমান ও তার পরিবারের সম্পক্তি ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এ সংক্রান্তে দুদকের পৃথক পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে এসব আদেশ দেন।
ডা. ইকবালের বিষয়ে দুদকের আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উক্ত ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা হতে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান কার্য চলমান।
তাই অভিযোগ ডা. এইচ বি এম ইকবাল ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পিসহ পরিবারের সদস্যগণ দেশ ছেড়ে বিদেশে পালাতে পারেন মর্মে বিশ্বস্তুসূত্রে জানা যায়। তারা পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং অনুসন্ধানকাজে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমন রহিতকরণ আবশ্যক।
মুহাম্মাদ মোহসিনের বিষয়ে দুদকের আবেদনে বলা হয়, মোহসিন এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে কোম্পানি খুলে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, জাল জালিয়াতি এবং কাগুজে বিল সৃষ্টি করে ঋণের নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানকালে মুহাম্মদ মোহসিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাতের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। বিশ্বস্ত সূত্রের প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে মুহাম্মাদ মোহসিন জাতীয় দেশত্যাগ করতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।
এনবিআরের আরজিনার বিষয়ে দুদকের আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। জানা যায়, তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।
সাবেক এমপি ডা. মো. মনসুর রহমানের আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক অবৈধ টাকায় ব্যাংক গড়ে তোলাসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান।
মনসুর রহমান ও তার স্ত্রী মাহফিলা আফরিফ নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর চালু রয়েছে। তাদের নামীয় ব্যাংক স্থিতি নগদায়ন এবং এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গিয়ে অন্যত্র স্থানান্তর/হস্তান্তর করার প্রচেষ্টা করছেন।
বর্ণিত ব্যাংক স্থিতি, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্রের অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর/স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে, উল্লিখিত ব্যাংক স্থিতি, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র অবিলম্বে অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।
(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/আরজেড/এমআর)

মন্তব্য করুন