লাউ চাষে তিন মাসে পাঁচ লাখ টাকা আয় তরুণ শিক্ষার্থীর

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর)
  প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯
অ- অ+

শীতকালীন সবজি লাউ। একসময় গ্রামের নারীরা বসতবাড়ির আঙিনায় শখ করে লাউগাছ লাগাতেন। সেই গাছের লাউ দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিক্রিও করতেন। তবে কালের বিবর্তনে বর্তমানে সারা বছর লাউ চাষ হচ্ছে। আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণে ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন অনেক কৃষক। দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। তাই বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষের দিকে ঝুঁকছেন মানুষ।

তেমনই একজন মো. আল আমিন। লেখাপড়ার পাশাপাশি লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার এই তরুণ শিক্ষার্থী। শুধু লাউ চাষ করে গত তিন মাসে আয় করেন চার-পাঁচ লাখ টাকা।

সালথার যদুনন্দী ইউনিয়নের জগন্নাথদী গ্রামের কৃষক লিটু শেখের ছেলে আল আমিন যদুনন্দী নবকাম পল্লী বিশ^বিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

জমি লিজ নিয়ে লাউসহ নানা ধরনের সবজি আবাদ করেন আল আমিন। তা থেকে আয় লাখ টাকা। তার সফলতা এলাকার অনেককে এখন লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করছে।

বৃহস্পতিবার (৩১) সকালে কথা হয় তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আল আমিনের সঙ্গে। দরিদ্র কৃষক পরিবারের বড় ছেলে বলে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারেও দায়িত্ব পালন করতে হয় তাকে। কিন্তু চাকরি করে তা পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছিল না।

আল আমিন বলেন, ‘দুই ভাই এক বোনের মধ্যে আমি সবার বড়। পরিবারের দারিদ্র্য বিবেচনা করে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকায় একটি চাকরি করেছি। কিন্তু এতে আমার পোষাচ্ছিল না। পরে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে গত বছর পরীক্ষামূলক সবজি চাষ করি। এতে আমার মনে হয়েছিল, সবজি চাষ করে সফল হতে পারব।’

সেই শুরু। এরপর পরিশ্রম আর একাগ্রতায় এগিয়ে যাওয়া। এবার ৯০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে বেড কেটে লাউ চাষ করেন আল আমিন। লাউগাছের মাচা, বেড কাটা, সার-ওষুধসহ সব মিলিয়ে তার খরচ হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

আল আমিন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে লাউক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরে গাছগুলোতে। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ লাউ বিক্রি করে দিয়েছি। গাছে থাকা বাকি লাউগুলো কিছু দিনের মধ্যে বিক্রি করব। সব মিলিয়ে খরচ বাদে আমার চার-পাঁচ লাখ টাকা আয় হবে। যদি বৃষ্টিতে ক্ষতি না হতো, তাহলে ছয় লাখ টাকা আয় করতে পারতাম।’

আল আমিনের এই হিসাব ৯০ শতাংশ জমির লাউ বিক্রি এবং তা চাষ শুরু থেকে মাত্র ৩ মাস ১০ দিনের।

লাউয়ের পাশাপাশি ৭৫ শতাংশ জমিতে কলা, ২০ শতাংশ জমিতে পেঁপে এবং কিছু জমিতে মরিচ আবাদ করেছেন। এতেও মোটামুটি আয় হয়েছে বলে জানান আল আমিন।

আগামীতে আরও বেশি জমিতে লাউ চাষ করবেন জানিয়ে আল আমিন বলেন, ‘আমার লাউ চাষে সফলতা দেখে এলাকার অনেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও লাউ চাষ করতে আগ্রহী। আমি তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমি চাই আমার মতো সবজি চাষ করে সফল হোক সবাই।’

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, ‘কয়েকটি হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন আল আমিন। আমাদের পক্ষ থেকে তার লাউক্ষেত পরিদর্শন এবং নানা ধরনের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, আল আমিনের মতো তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হোক আরও। আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করব।’

(ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে ট্রল, দিনাজপুরের এএসপি প্রত্যাহার
‘গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি’
“চাঁদাবাজ যতই প্রভাবশালী হোক, পার পাবে না”
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা