সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যেতে ক্রিকেটারদের মানসিকতায় উন্নতি চান সালাউদ্দিন
কোচিংয়ে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয় মুখ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ হিসেবেও দেখিয়েছেন মুনশিয়ানা। জাতীয় দলের সাবেক এই সহকারী কোচ বরাবরই আস্থার প্রতীক ক্রিকেটারদের কাছে। মাশরাফি থেকে শুরু করে মুশফিক-লিটন সবাইকেই কোচিং করিয়েছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে সফল সালাউদ্দিনকে ফের জাতীয় দলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, টাইগারদের সিনিয়র সহকারী কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলছে। এই সিরিজের পর টাইগারদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ দিয়েই ফের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ শুরু করবেন তিনি। নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি তিনি। তবে আজ শুক্রবার বিসিবির প্রকাশিত ভিডিওতে কথা বলতে দেখা গেছে তাকে।
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমদের প্রজন্ম বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটি পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তবে দেশের ক্রিকেট এরপর আর এগোয়নি বলে মনে করেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ দলের উন্নতির জন্য তরুণ ক্রিকেটারদের চিন্তা-ভাবনা ও মানসিকতায় পরিবর্তন দরকার বলে মনে করেন দেশের অন্যতম সেরা এই কোচ।
ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা বলি সাকিব, তামিম, মুশফিকেরা একটা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে গেছে, ওটা যদি না ভাঙতে পারি, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বাংলাদেশের ক্রিকেট এগোয়নি। (আমাদের কাজ) পরবর্তী প্রজন্ম যেন তাদের চেয়ে ভালো খেলোয়াড় হতে পারে, বড় হতে পারে। সেটা অসম্ভবও নয়। এখন খেলোয়াড়েরা মেন্টালি, ফিজিক্যালি ও আর্থিক দিক থেকে অনেক স্বাবলম্বী। যেটা হয়তো আগে ছিল না। এখন ভালো করার সুযোগ বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এইচপি বা অনূর্ধ্ব-১৯-এর খেলোয়াড়দের লক্ষ্য জিজ্ঞেস করলে বলবে জাতীয় দলে খেলতে চাই। স্বপ্নটা কিন্তু ওখানেই থেমে গেল। জাতীয় দলে খেললে এরপর কীভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে সেটা তারা জানে না। যারা এতদিন খেলছি, তাদের আসলে কী ধরনের লক্ষ্য হওয়া উচিত, মেন্টালিটি হওয়া উচিত, কীভাবে আরও বড় খেলোয়াড় হওয়ার জন্য নিজেকে মোটিভেট করা উচিত, এই ছোট ছোট কাজগুলো করে। বড় কাজ তা নয়। এই ছোট কাজগুলো যদি করা যায়, বিশেষ করে ড্রেসিংরুমে এবং ড্রেসিংরুমের বাইরে কীভাবে চিন্তা করবে, সেই চিন্তার জায়গাটা যদি আরও পরিষ্কার করে ধারণা দেওয়া যায়, তাদের আরও ভালো ভবিষ্যৎ সামনে আছে।’
এছাড়া নতুন পাওয়া এই দায়িত্বকে নিজের চ্যালেঞ্জ দেখছেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই শুনছি বোর্ড দেশি কোচদের একটা প্ল্যাটফর্ম করে দেবে। সেই জায়গায় আমি যদি পথটা দেখাতে পারি, সেটা যত দিনের জন্যই হোক, আমার দেশি কোচরাও হয়তো ভালো করবে। পরবর্তী সময়ে যে সব দেশি কোচ আসবে বোর্ডের বিশ্বাস বাড়বে, মানুষের বিশ্বাস বাড়বে, জনগণের বিশ্বাস বাড়বে। সেই সঙ্গে কোচের নিজেরও বিশ্বাস বাড়বে যে আমরাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে পারি। আমার মনে হয় এই বিশ্বাস টা কারও না কারও নেওয়া উচিত ছিল। সেই বিশ্বাসটা যদি আমি রাখতে পারি, পরের কোচদের জন্য বড় পথ খোলা হয়ে যাবে। একজন কোচ হিসেবে কোচ-সমাজে পথ দেখানোর একটা বড় দায়িত্ব আমার পড়ে গেছে। সেটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।’
(ঢাকাটাইমস/ ০৮ নভেম্বর/এনবিডব্লিউ)
মন্তব্য করুন