আ.লীগ আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে ‘সত্যানুসন্ধান’ কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৯
অ- অ+

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনাকাটা, অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে হওয়া অনিয়ম ও দুর্নীতি খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’। এই কমিটি ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত এক যুগের অনিময় ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে কাজ করবে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। ১১ সদস্যের এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে আছেন উপাচার্য নিজেও।

এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিটি খাতে যেভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শিক্ষাখাতের ‍দুর্নীতি। এই দুর্নীতি অনুসন্ধান করে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা দরকার।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়টি সত্যানুসন্ধান কমিটি (Truth Finding Committee) গঠন করেছে। কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত ১২ বছরে ক্রয়-বিক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ, বাড়ি-ভাড়া, গাড়ি ব্যবহার, প্রকাশনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো চিহ্নিত করবে। এছাড়া প্রশাসনিক, একাডেমিক ও আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, সংবিধি/রুলস-রেগুলেশন ও সরকারি বিধিবিধান লঙ্ঘিত হয়ে থাকলে তা চিহ্নিত করবে এই সত্যানুসন্ধান কমিটি।

গত ৩ নভেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২৬৩তম সভায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আজ (১৩ নভেম্বর) প্রকাশ করা হলো ১১ সদস্যোর কমিটি।

কমিটিতে যারা আছেন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত দুর্নীতি অনুসন্ধান কমিটিতে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীদের রাখা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নুরুল ইসলাম, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. কামরুল হাসান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানিসম্পদ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সাব্বির মোস্তফা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা। এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন।

উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে এখানে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য হয়েছে। আমরা নিরপেক্ষভাবে সব দুর্নীতি-অনিয়ম ও বৈষম্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করব; যাতে সবকিছু উদঘাটিত হয়। এ কারণে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অনুসন্ধান কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। কমিটি ভালোভাবে কাজ করুক। আর দুর্নীতি হয়ে থাকলে তো সেটা রোধ করতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি কমিটির সফলতা কামনা করি যাতে তারা সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। সেখানে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে) অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি হয়ে থাকলে সেটা অনুসন্ধান করে বের করবে। সেই সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সত্যিকার অর্থে আমাদের সামাজিক ন্যায়বিচারে বড় ধরনের জায়গায় রূপান্তর করবে- এই প্রত্যাশা নতুন কমিটির কাছে, নতুন বাংলাদেশের কাছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/এসএস/মোআ)

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পার্বত্য অঞ্চলকে পাশ কাটিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা
নতুন বাংলাদেশে একটি সুন্দর সমাজ গড়তে চায় বিএনপি: আমিনুল হক
জ্যামাইকা টেস্ট: অস্বস্তি নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশ
সোনার দাম ভরিতে কমল ১৪৮১ টাকা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা